Fruit flies in space: ভারতের বহুল প্রতীক্ষিত গগনযান মিশনের প্রথম যাত্রায় মহাকাশে কোনও মানুষ নয়, পাঠানো হবে ছোট্ট একদল ফলের মাছি। এই সিদ্ধান্ত শুধু বিজ্ঞানীদের কল্পনার ফসল নয়, বরং মহাকাশ গবেষণার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
কেন মাছি?
গগনযান-১ মিশনের অধীনে পাঠানো হবে Drosophila melanogaster, অর্থাৎ ফলের মাছি। এদের দেহে প্রায় ৭৫ শতাংশ মানব-সম্পর্কিত জিন রয়েছে, যার কারণে এই মাছিগুলিকে মানুষ-সদৃশ প্রজাতি হিসেবে ধরা হয় গবেষণার জন্য।
টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (TIFR) এর বিজ্ঞানীরা বলছেন—এই মাছিগুলির ওপর মহাকাশের প্রভাব পরীক্ষা করলে বোঝা যাবে নভোচারীরা কেমন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
আরও পড়ুন- পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চোখের জল, একফোঁটায় ২৬ সাপের বিষ নিরাময়, গবেষণায় তোলপাড়
গবেষণার ধরন
এই মিশনের জন্য মাছিগুলিকে ভাগ করা হবে দুই দলে:
-
একটি দল মহাকাশে যাবে গগনযান-১ এর মাধ্যমে
-
অপর দল থাকবে পৃথিবীতে
উভয় দলের মধ্যে জিনগত ও শারীরিক পরিবর্তন নিরীক্ষণ করে দেখা হবে মহাকাশযাত্রার কী কী প্রভাব হতে পারে জীবিত দেহের ওপর।
আরও পড়ুন- বর্ষায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমস্যা এখন অতীত,বাজেটের মধ্যেই বেছে নিন বাজারের Top 10 ইনভার্টার
বিশেষ করে একটি জিন—SIRT1—গবেষণায় বিজ্ঞানীদের মূল লক্ষ্য। এটি শরীরের বার্ধক্য, স্ট্রেস এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই জিন মহাকাশে কীভাবে আচরণ করে, তা জানলে ভবিষ্যতের মহাকাশচারীদের জন্য ওষুধ ও ফুড সাপ্লিমেন্ট তৈরি করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞানীদের মতামত
TIFR এর গবেষক জুলি আদরকার বলেন, 'আমরা মহাকাশে শরীরের জৈবিক পরিবর্তন বুঝতে চাই। মানুষ পাঠানোর আগে এই ছোট প্রাণীদের মাধ্যমে মহাকাশের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুধাবন করাটাই উচিত।' অন্য দিকে প্রধান গবেষক উল্লাস কোলাথুর বলেন, 'আমরা SIRT1 জিনের পরিবর্তনের মাধ্যমে মহাকাশের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কীভাবে কমানো যায়, তা খতিয়ে দেখছি।'
আরও পড়ুন- সস্তার 'রিচার্জ বিস্ফোরণ', ২০০-এর কমে দেখে নিন Jio, Airtel, Vi-এর সেরা প্ল্যানের তালিকা
ফলের মাছি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
-
৭৫% জিন মানব রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত
-
মশাদের হজম এবং মলত্যাগের প্রক্রিয়া মানুষের মত
-
আয়ুষ্কাল মাত্র ৫ থেকে ৬০ দিন—অল্প সময়েই পূর্ণ গবেষণা সম্ভব
-
মহাকাশের রেডিয়েশন ও মাইক্রোগ্র্যাভিটির সরাসরি প্রভাব বুঝতে সাহায্য করবে মাছিরা
গগনযান কবে উড়বে?
প্রথম মনুষ্যবিহীন গগনযান উড়বে ২০২৫ সালের মধ্যে। এরপর হবে আরও একটি টেস্ট ফ্লাইট। সফলতা এলে, ভারতীয় নভোচারীরা Earth’s low orbit-এ প্রথমবারের মতো ভারতীয় মিশনে যাত্রা করবেন।
আরও পড়ুন- মহিলারা কেন পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট হয়, প্রেমে পড়ে? জানেন এর পিছনের বিজ্ঞান?
ভারতের জন্য কী গুরুত্ব?
-
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা
-
মানুষের আগে প্রাণীর মাধ্যমে মহাকাশে বায়োলজিক্যাল রিস্ক যাচাই
-
মহাকাশে মেডিকেল ও বায়ো-সাপোর্ট সিস্টেম উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে তুলবে এই গবেষণা
-
ভবিষ্যতের Gaganyaan, Chandrayaan বা Mars মিশনের জন্য প্রস্তুতির অংশ হবে এই গবেষণা
এই মিশন শুধু ISRO-এর প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নয়, ভারতের জিনগত গবেষণার দিগন্তও খুলে দেবে। আর এই গবেষণার ছোট্ট নায়ক—ফলের মাছি—প্রমাণ করে দিল, মহাকাশে যাত্রা শুধুই মানুষই নয়, মাছিরাও করতে পারে।