শুক্রবার ভারতীয় প্রযুক্তি মন্ত্রকের কর্মকর্তারা হোয়াটসঅ্যাপের সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন। জনপ্রিয় এই মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য রুখতে সংস্থা কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানিয়েছেন এক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা।
হোয়াটসঅ্যাপ ভারতের প্রযুক্তি মন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদকে জানায়, ইতিমধ্যে ভুল তথ্য প্রচারে বাধা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে ফেসবুকের অধীনস্থ এই মেসেজিং সার্ভিসে। যা ভারতের জন্য ক্ষতিকর, এমন কোনো তথ্য বা খবর যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক দাবি করে, ছড়িয়ে পড়া ভুয়ো খবরে দেশে গণপ্রহার ও দাঙ্গা হাঙ্গামার হার বাড়ছে।
কদিন আগে মেসেজের উৎস যাতে সুনির্দিষ্টভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেজন্য হোয়াটসঅ্যাপকে ফের বার্তা দিয়েছিল ভারতের তথ্য প্রযুক্তি ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রক। বিভাগীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের স্পষ্ট দাবি, "সরকার হোয়াটসঅ্যাপ-কে কোনও মেসেজ ডিক্রিপ্ট করতে বা পড়তে বলছে না। শুধু কোনও একটি মেসেজের উৎস কোথায়, সে বিষয়ে তথ্য প্রস্তুত রাখতে বলছে।"
আরও পড়ুন:ভারতের আকাশে ড্রোন ওড়ানোর রেজিস্ট্রেশন শুরু
হোয়াটসঅ্যাপ থেকে জানানো হয়েছে, এতদিন ধরে যে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ছিল তার দৌড় কতটা, পাশাপাশি যাতে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনা ঠেকানো যায়, তারই চেষ্টা চলছে। তারা আরও জানায় যে বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে নিত্য আলোচনা করা হয় কিভাবে গোপনীয়তা বজায় রেখে হোয়াটসঅ্যাপকে নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম করে তোলা যায়।
কয়েকদিন আগে হোয়াটসঅ্যাপ জনস্বার্থে প্রচারের জন্য একটি বিজ্ঞাপনের ভিডিও শেয়ার করেছে। মূলত টেলিভিশনেই এই বিজ্ঞাপনের প্রচার করা হবে। 'শেয়ার জয়, নট রিউমারস', অর্থাৎ মজা আনন্দ ভাগ করে নিন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে, তবে গুজব নয়। ৬০ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপনের মূল বিষয়, ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়লে কী পরিস্থিতি হতে পারে। মুম্বইয়ের শীর্ষ গুহঠাকুরতার পরিচালনায় তৈরি হবে এই ছবি। যার জন্য মুম্বইয়ের ট্যাপরুট সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধেছে এই মেসেজিং অ্যাপ। দশটি ভাষায় গোটা ভারতে বিভিন্ন চ্যানেলে, এবং ফেসবুক-ইউটিউবে দেখানো হবে এই বিজ্ঞাপন। রাজস্থান ও তেলেঙ্গানায় ভোটের আগেই দেখানো শুরু হয় বিজ্ঞাপন।
আরও পড়ুন:সেরে উঠছে ওজোন স্তরের ছিদ্র
গত অগাস্ট থেকে এই নিয়ে রবিশঙ্কর প্রসাদের সঙ্গে মোট তিনবার সাক্ষাত হল হোয়াটসঅ্যাপের সিইও-র। গত বৈঠকে আলোচনার পর হোয়াটসঅ্যাপের কাজে কতটা অগ্রগতি হয়েছে তা নিয়েই পর্যালোচনা হয়েছে এদিনের মিটিংয়ে। আগের আলোচনাতেই ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের সঙ্গে সহমত হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ এবং তারা জানিয়েছিল কিভাবে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে হয় সে বিষয়ে ভারতীয়দের ‘শিক্ষিত করার’ ভার নেবে সংস্থাই।
ভারতের আসন্ন নির্বাচনের আগে এই মেসেজিং অ্যাপকে ব্যবহার করে ভুয়ো খবরের ভিত্তিতে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে দিকে নজর দিতেই হোয়াটসঅ্যাপকে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক।
Read the full story in English