Israel air defense: শুক্রবার সকালে তেল আবিবে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান ইজরায়েলের বিরুদ্ধে বিরাট এক প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে। এই পদক্ষেপকে ইসরায়েলের অপারেশন রাইজিং লায়ন- এর প্রতিশোধ হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। যেখানে ইরানের একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালায় ইজরায়েল। হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। এরপরই ইরান ১৫০-এর বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তার মধ্যে অধিকাংশ'ই আকাশে ধ্বংস করতে সক্ষম হয় ইজরায়েলি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম।
ইরানের আক্রমণে ইজরায়েলের দুর্ভেদ্য ঢাল, যা একবারে হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম, পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রও হামলাও আটকে দিতে সক্ষম থামাতে ইজরায়েলের উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম? ইরানের সঙ্গে ইজরায়েলের সংঘাত আবহে একটা প্রশ্ন মানুষের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে ইজরায়েলের কাছে রয়েছে আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিং এবং অ্যারো-৩ এর মতো উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম।
ইজরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের মধ্যে একটি বলে বিবেচনা করা হয়। ছোট দেশ হলেও ইজরায়েলের দিকে আসা প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং রকেটকে গুলি করে ধ্বংস করার জন্য, তাদের কাছে আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিং এবং অ্যারো-৩ এর মতো উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে কাজ করে এই উন্নত অ্যান্টি মিসাইল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম?
আয়রন ডোম
আয়রন ডোম হল ইজরায়েলের উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের মধ্যে একটি যা দেশকে মিসাইল হামলার আক্রমণ থেকে বহু-স্তরীয় সুরক্ষা প্রদান করে। বিভিন্ন দূরত্ব এবং উচ্চতা থেকে আগত শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই এটি আকাশেই সেগুলি ধ্বংস করতে সক্ষম। আয়রন ডোম ৪ থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরত্বে আকাশে রকেট এবং ড্রোন ধ্বংস করে।
সকল আবহাওয়ায় কাজ করতে সক্ষম
আয়রন ডোমে রয়েছে উন্নত রাডার সিস্টেম এবং ইন্টারসেপ্টর মিসাইল। বিমান আক্রমণ প্রতিরোধে এর সাফল্যের হার ৯০ শতাংশ। এটি যে কোনও আবহাওয়ায় কাজ করতে সক্ষম।
ডেভিড'স স্লিং হল ইসরায়েলের মাঝারি পাল্লার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এটি ৪০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। ডেভিড'স স্লিং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করতে সক্ষম।
হিট-টু-কিল প্রযুক্তি
ডেভিডের স্লিং হিট-টু-কিল প্রযুক্তিতে কাজ করে। অর্থাৎ, এটি শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র বা বিমানের সাথে সরাসরি সংঘর্ষের মাধ্যমে ধ্বংস করে। এটি থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি ৯,২৬১ কিমি/ঘন্টা গতিতে শত্রুকে আক্রমণ করে।
অ্যারো-৩ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম-
ইজরায়েলের সবচেয়ে দূরপাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নাম অ্যারো-৩। এটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ICBM) প্রতিহত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। অ্যারো-৩ ১০০ থেকে ২৪০০ কিলোমিটার রেঞ্জে এবং ১০০,০০০ ফুটেরও বেশি (প্রায় ৩০ কিলোমিটার) উচ্চতায় শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে পারে।
অ্যারো-৩ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকেও ট্র্যাক করতে পারে। এর গতিবেগ ঘণ্টায় ৯,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি। অ্যারো-৩ যৌথভাবে তৈরি করেছে আমেরিকান কোম্পানি বোয়িং এবং ইসরায়েলি কোম্পানি আইএআই।
এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, ইজরায়েল কি তার দিকে আসা কোনও পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আটকাতে সক্ষম? উত্তর হল হ্যাঁ। অ্যারো-৩ পারমাণবিক বোমা বহনকারী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থামাতে ডিজাইন করা হয়েছে।