বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছেন ২০২২ সালে ভারতীয় মহাকাশচারী চাঁদে যাবে। আর এই ঘোষণার ফলে ইসরো অবশেষে গত ১৫ বছর ধরে চলা প্রকল্পের একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা পেয়ে গেল।
২০০৪ সাল থেকে থাকে এ নিয়ে প্রস্তুতি চলছিল ইসরোর। ইসরোর পরিকল্পনা কমিটির কাছে শুরুতে এ ব্য়াপারে কোনও নির্দিষ্ট সময়রেখা ছিল না। তবে প্রাথমিক আলোচনায় ২০১৫ নাগাদ টার্গেট ঠিক হয়েছিল। সম্প্রতি, ২০১৬ সালের মে মাসে সরকার লোকসভাকে জানায়, সাম্প্রতিক ভবিষ্যতে মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা তাদের নেই। সত্যি বলতে এখনও সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও অনুমতি ইসরো এ ব্যাপারে পায়নি। তবে গত কয়েক বছর ধরে, মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রকল্পে ইসরো কে সহায়তা করছে সরকার।
মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রকল্প ইসরো-র এতদিনের অন্যান্য সফল প্রকল্পের থেকে অনেকটাই পৃথক। চাঁদে বা মঙ্গলে মহাকাশযান পাঠানোর তুলনাতেও এই প্রকল্প অনেক বেশি কঠিন। মহাকাশে মানুষ পাঠানোর জন্য ইসরোকে এমন একটা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, যাতে পৃথিবীর কক্ষপথ ছেড়ে মহাকাশযান শূন্যে যাওয়ার পরে সেটিকে আবার ফিরিয়ে আনা যায়। একই সঙ্গে এমন একটা মহাকাশযান বানাতে হবে যাতে মহকাশচারী মানুষ মহাশূন্যে পৃথিবীর মতো অবস্থায় থাকতে পারেন। গত কয়েক বছরে ইসরো এসব নিয়ে বেশ কিছু সফল পরীক্ষা করলেও, এ সংক্রান্ত আরও অনেক পরীক্ষা বাকি রয়েছে।
GSLV Mk-III
এ ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, এমন একটা মহাকাশযান তৈরি, যা মহাশূন্যে অনেকটা ওজন বহনে সক্ষম। মানববহনকারী মহাকাশযানকে অতিরিক্ত ৫ থেকে ৬ টন ওজন বহন করতে হবে। ইসরোর প্রধান উৎক্ষেপণযান পিএসএলভি, যা চন্দ্রযান ও মঙ্গলযান মিশনে ব্যবহৃত হয়েছিল, তা খুব বেশি হলে ২ টন ওজন বহনে সক্ষম, এবং তাও পৃথিবীর ৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে। সে কারণেই প্রস্তুতি চলছে GSLV Mk-III- এর, যে উৎক্ষেপণযান মহাকাশের বেশি গভীরে, বেশি ওজনের মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করতে পারবে।
India will have a human in space programme by 2022. @isro already well on track to do this. Technologies being used and developed will have many benefits to society and to our science-ecosystem. https://t.co/GAz0zcqpWc
— Principal Scientific Adviser, Govt. of India (@PrinSciAdvGoI) August 15, 2018
আরও পড়ুন, ২০২২ সালের আগেই ভারতীয়রা যাবে মহাকাশে
গগনযান কী?
তিন দশকের গবেষণার পর, ২০১৪-র ডিসেম্বরে GSLV Mk-III, যাকে এখন বলা হচ্ছে LVM-3, তার সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। গত বছরের জুন মাসে LVM-3-র মাধ্যমে সাফল্যের সঙ্গে GSAT-19 উপগ্রহটি মহাকাশে পাঠানো হয়েছে।
মানববহনকারী মহাকাশযানকে মহাশূন্যে নিয়ে যাবে LVM-3, এ কথা ঘোষণা করা হয়ে গেছে। আগামী কয়েক বছরে GSLV-র বেশ কিছু উৎক্ষেপণ পরিকল্পিত রয়েছে। এর ফলে ক্রায়োজেনিক প্রযুক্তি ব্য়বহার করে আরো বেশি ভারী মহাকাশযান পাঠানোর প্রযুক্তি নিখুঁত করার দিকে এগোতে পারবে ইসরো। এ বছরের জুনেই GSLV Mk-III মাধ্যমে পরবর্তী ১০টি উৎক্ষেপণের ৮.২ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বাজেট
পরিকল্পনার শুরুতে মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রকল্পে খরচ ধার্য করা হয়েছিল ১২,৪০০ কোটি টাকা। তবে এ বছর জানানো হয়েছে, ১০,০০০ কোটি টাকার মধ্যেই সফল হয়ে যাবে মহাকাশে ভারতীয় পাঠানোর প্রকল্প।