আদিম মানুষকে নিয়ে গবেষণায় নজিরবিহীন সাফল্য। প্যালেওনথ্রোপোলজিস্টরা এমন মিসিং লিংক খুঁজে পেলেন, যা জুড়ল আদিম মানুষের বিবর্তনের অজানা ইতিহাস। গবেষণায় জানা গেল, বিলুপ্ত মানব প্রজাতি হোমো নালেডি কবর দিতে জানত। তাদের মৃতদেহকে এই আদিম মানুষরা কবর দিত। শুধু মানুষই নয়। তারা অর্থপূর্ণ প্রতীকও ব্যবহার করতে শিখেছিল। সেই প্রতীকও তারা গুহায় কবর দিয়েছিল বলেই জানতে পেরেছেন গবেষকরা।
এসব ঘটেছিল হাজার হাজার বছর আগে, আদিমযুগে। যা পরবর্তী সময়ে নিয়ান্ডারথাল এবং হোমো সেপিয়েন্সরা করায়ত্ত করেছিল। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের মতে, প্রাক-প্রিন্ট সার্ভার বায়োআরক্সিভ-এ আপলোড করা দুটি গবেষণাপত্রে এই দাবিগুলি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক লি বার্গার নিউ ইয়র্কের স্টনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির এক সম্মেলনে এই মিসিং লিংক পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এতদিন গবেষকরা নিয়ান্ডারথাল প্রজাতি সম্পর্কে জানতেন। হোমো নালেডির আবিষ্কার তাঁদের সামনে গবেষণার নতুন জগৎ খুলে দিয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার উইটওয়াটারসরান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিদ লি বার্গারের জন্য। সায়েন্টিফিক আমেরিকান অনুযায়ী বার্গার ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার রাইজিং স্টার গুহা ব্যবস্থায় ১৫টি পৃথক প্রজাতির ১,৫০০-রও বেশি জীবাশ্মর নমুনা উদ্ধার করেছিলেন। এই প্রজাতির মানুষ ৩০০,০০০ থেকে ২০০,০০০ বছর আগে জীবিত ছিল।
জীবাশ্মগুলো এমন মানব প্রজাতির, যারা পুরনো এবং নতুন বৈশিষ্ট্যের বিবর্তনের মধ্যবর্তী সময়ের। এই প্রজাতির মানুষরা আমাদের মতই সম্পূর্ণ সোজা হয়ে হাঁটতে পারত। আমাদের মতই তাদের হাত ছিল। তবে তাদের কাঁধ ছিল গাছে বা পাহাড়ে চড়ার অনুকূল। দাঁতগুলো ছিল স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মত। তবে, সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল তাদের মস্তিষ্কের আকার। যা ছিল ৪৫০ থেকে ৬০০ ঘন সেন্টিমিটারের মধ্যে। মস্তিষ্কের এই আকার আধুনিক মানুষের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ।
আরও পড়ুন- ‘একটা দল দেখান, যার সঙ্গে বিজেপির আঁতাত নেই’, সাফ কথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর
এই প্রসঙ্গে গবেষক আন্দ্রে গঞ্জালভেস ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছেন, 'এগিয়ে থাকা জীব হিসেবে মানুষ সত্যিই অদ্ভূত। কারণ, প্রাণীজগতে একমাত্র মানুষই মৃতদেহকে কবর দেয়। যা অন্য কোনও প্রাণী করে না।'