ভেঙে যায়নি, অক্ষত রয়েছে বিক্রম, সোমবার সেই বার্তাই দিল ইসরো। জানা যাচ্ছে, যে গতিতে অবতরণের কথা ছিল। সেই গতি থেকে সামান্য বেশি গতিতে আঁচড়ে পড়েছে। অরবিটারের পাঠানো থার্মাল ইমেজে দেখা গেছে চাঁদের পৃষ্ঠদেশে ঢালু কোনো জায়গায় রয়েছে বিক্রম। অরবিটারে কোনো বার্তা এখনও পাঠায়নি বিক্রম। যদি কোনো সংযোগ করা যায়, তাহলেই বিক্রমের থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে রোভার তথা প্রজ্ঞান।
আশা ছাড়েনি। প্রাণপন চলছে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা। ল্যান্ডিং এর পর থেকেই নিশ্চুপ হয়ে পড়েছে ল্যান্ডার বিক্রম। অরবিটার ৯৬x১২৫ কক্ষপথে থেকে চাঁদের মাটিতে পড়ে থাকা ল্যান্ডারের ছবি পাঠায় রবিবার। তবে ল্যান্ডারের কী হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় বিজ্ঞানীদের কাছে। অবতরণের পর ভোরের আলো পাওয়ার পরই ল্যান্ডারের ভিতর থেকে প্রজ্ঞানের বেরিয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি এখনও। চাঁদের মাটি থেকে ২.১ কিমি উচ্চতার পর আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বিক্রমের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: চাঁদের মাটিতে খোঁজ মিলল বিক্রমের
ইসরো বর্তমানে টেলিমেট্রি, ট্র্যাকিং এবং কম্যান্ড নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। প্রসঙ্গত, প্রজ্ঞানের কাজ করার জন্য কমে আসছে দিন। এখন হাতে রয়েছে মাত্র ১২ দিন। ইসরো জানিয়েছে, "যদি কিছু না হয় এবং সবকিছু অক্ষত থাকে তবে যোগাযোগ করা যেতে পারে। কিন্তু সামান্য কিছু ক্ষতি হলেই যোগাযোগ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সম্ভাবনা অনেকাংশেই কম। যদি এটির সফট ল্যান্ডিং হয়ে থাকে, এবং যদি সমস্ত সিস্টেমগুলি কাজ করে, তবে কেবল যোগাযোগটি পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে।
পাওয়ার জেনারেটিং করা কোনো সমস্যা নয়, কারণ ল্যান্ডারের গায়ে লাগানো রয়েছে সোলার প্ল্যানেল। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে ইন্টারনাল ব্যাটারি। সুতরাং কাজ করার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন তার অভাব হওয়ার কথা নয়।
আরও পড়ুন: চন্দ্রযান’২ এর পর সৌরজগতের রহস্য উদঘাটনে ইসরোকে সাহায্য করবে নাসা
ল্যান্ডারের সঙ্গে রয়েছে তিন-তিনটি ক্যামেরা। ১) ল্যান্ডার পোজিশন ডিটেকশন ক্যামেরা (LPDC), ২) ল্যান্ডার হরাইজেন্টাল ভেলোসিটি ক্যামেরা (LHVC) ৩) ল্যান্ডার হ্যাজারডাস ডিটেকশন অ্যান্ড অ্যাভয়ডেন্স ক্যামেরা (LHDAC)। ল্যান্ডারের চাঁদের মাটিতে নামা মাত্রই ইসরো চাস্তে, রম্ভা এবং ইলসা নামের তিনটি সোলার প্যানেল মোতায়েন করার কথা ছিল। ল্যান্ডার বিক্রমের একেবারে নিচের কিউবিকলে রয়েছে চাস্তে। রম্ভা থাকবে বিক্রমের গায়ে লেগে আর ইলসা থাকবে একেবারে ওপরের অংশে। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু করারা কথা ছিল ওই সোলার প্যানেলগুলির। তারপরই ৭ সেপ্টেম্বর সকালের শুরুতে চাঁদের মাটিতে বিক্রমের পেট থেকে বেরিয়ে আসত রোভার প্রজ্ঞান। এই চেষ্টাতেই মূলত এখন নাওয়া খাওয়া ভুলেছে ইসরো বিজ্ঞানীরা।