মুম্বই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের ধীরগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাপানের কনসাল জেনারেল রোজি নোদা। ইতিমধ্যেই পেরিয়েছে জমি অধিগ্রহনের নির্ধারিত সময়সীমা, যা ছিল ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর। কাজেই ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে রোজি নোদা বলেন, "জাপানিরা তো এই কাজের গতি বাড়াতে পারে না। আপাতত জমি অধিগ্রহণ করার ক্ষেত্রে আমরা গুজরাট ও মহারাষ্ট্র সরকারের ওপর নির্ভর করছি।" প্রকল্পটি কবে শেষ হবে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, "আমি সঠিক জানি না। তবে মনে করি, যত কম সময়ে সম্ভব কাজ শেষ হওয়া উচিত।" ৩০ জানুয়ারি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গুজরাটে জমি অধিগ্রহণ করতে সময় লাগবে আরও সাত থেকে আট মাস। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কারণে ২০১৯-এর জুন মাস অবধি আপাতত সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাতীয় হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেড গুজরাটে ৬১২ হেক্টর, দাদরা ও নগর হাভেলিতে ৭.৫ হেক্টর এবং মহারাষ্ট্রে ২৪৬ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করবে। গুজরাটে ৫,৪০৪ জন - যাঁদের মধ্যে রয়েছেন আহমেদাবাদে ১,১৯৬ জন - বাসিন্দাকে প্রকল্পের জন্য জমি ছেড়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: Bullet train start in India, 2022: বাইশের বুলেট; বাধা ও অগ্রগতি
১৯ ফেব্রুয়ারি গুজরাট বিধানসভায় প্রশ্নোত্তরের সময় বুলেট ট্রেন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিতিন প্যাটেল। তিনি বলেন, গুজরাটের মোট ১৯৭টি গ্রামে জমি অধিগ্রহণ করা হবে, এবং "এখন পর্যন্ত কৃষকরা ১,৬০১ একর (১৬০ হেক্টর) জমি ছেড়ে দিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৬২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।"
জাপানের মত প্রযুক্তি কি থাকবে ভারতের বুলেট ট্রেনে? আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জাপানিদের আনা হবে ভারতীয় রেল চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য। তৈরি করা হচ্ছে হাই স্পিড ট্রেনিং শিক্ষা সংস্থা। ইতিমধ্যে বুলেট ট্রেনের কাজ শুরু হয়ে গেছে ভদোদরায়। প্রকল্পের জন্য আপাতত প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দোতলা পাঁচটি হোস্টেল বাড়ি তৈরি হয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে প্রায় ১০০ জন মজুর এবং উচ্চপদস্থ কর্মচারীর পরিকল্পনা করার জন্য লাগাতার মিটিং চলছে। NHSRCL প্রকল্প প্রধান প্রদীপ অহিরকার বলেন, “এই মাস থেকেই শুরু হয়েছে লাগাতার কাজ।"
আরও পড়ুন: বুলেট ট্রেনের নাম-নকশা ঠিক করতে পারবেন আপনিও, পছন্দ হলে লাখ টাকা পুরস্কার
প্রকল্পটির জন্য গত বছর আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে জমি অধিগ্রহণ। ভদোদারা, আনন্দ, ভারুচ, এবং সুরাটের কিছু অঞ্চলের কৃষকরা তাঁদের জমি ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছেন। চারবার বদলানো হয়েছে ক্ষতিপূরণের হিসাব। সবশেষে ২৫ শতাংশ বোনাস সহ ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে জমি মালিকদের, এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে যদি কেউ ঘরছাড়া হন, তাহলে তিনি অন্য কোনও জায়গায় ৫০০ বর্গফুটের ওপর নির্মিত একটি নতুন বাড়ি নিতে পারেন অথবা একটি নতুন ঘর নির্মাণ করতে পারেন। যার খরচ দেবে সরকার।
আরও পড়ুন: বুলেটের ডেডলাইন বাইশ, কতটা কাজ এগোলো ভারতে ?
অন্যদিকে, জাপান ইনফরমেশন অ্যান্ড স্টাডি সেন্টারের উন্নতির জন্য জাপান সরকার আহমেদাবাদ ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে ৩৮ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে। সোমবার কনসাল জেনারেল রোজি নোদা এবং গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মুকেশ প্যাটেল এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এএমএ জাপানী ভাষা শেখার সফটওয়্যার কিনবে এবং জাপানী ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতির প্রায় ২৫০ টি নতুন বই তাদের লাইব্রেরিতে রাখা হবে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর নোদা বলেন, "গুজরাটে ৩২১ টি জাপানি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হচ্ছে এবং ৩৪৭ জন জাপানি নাগরিক বসবাস করছেন।"
Read the full story in English