অতিরিক্ত নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ভারতে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্লক করে দেওয়া হতে পারে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ইত্যাদি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট বা মাধ্যম। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে দেশজুড়ে তৎপর হয়ে উঠেছে টেলিকম বিভাগ। তথ্য প্রযুক্তি আইন ১৯৬৯ এর আওতায় গত মাসের ১৮ তারিখ ভারতের ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন, ভারতের শিল্প সংস্থা সেলুলার অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া, এবং অন্যান্যদের কাছে লিখিত ভাবে এই সাইটগুলি ব্লক করে দেওয়ার সম্ভাবনার কথা জানতে চায় টেলিকম বিভাগ।
সূত্রের খবর, চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ক্ষেত্রে সমস্যার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। যার নেপথ্যে রয়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। যে কারণে ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ইত্যাদির মত আরও কিছু মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্লক করা জরুরি হয়ে উঠেছে। তথ্য প্রযুক্তি আইন ৬৯ এর অন্তর্গত ধারার অধীনেই আগামী দিনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই আইনে কেন্দ্রীয় সরকার অথবা কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে তথ্য ব্লক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতের অখণ্ডতা, প্রতিরক্ষা এবং বিদেশী রাষ্ট্র বা জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য আদানপ্রদানে ছেদ টানতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
সাম্প্রতিককালে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে একাধিক ভুয়ো খবর। যার জন্য দাঙ্গার আতঙ্ক ছড়াতে দেখা গেছে। অথবা কোথাও অকারণে সৃষ্টি হয়েছে বিদ্বেষ। সে কারণেই লিখিত ভাবে জানানোর পর, জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন হোয়াটসঅ্যাপের ভোল বদল ঘটেছে, অতিরিক্ত নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য আনা হয়েছে বিভিন্ন ফিচার।
আরও পড়ুন: গুগল স্বীকার করল UIDAI হেল্পলাইন নম্বর ‘ভুলবশত’ কোড করা হয়েছে
তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ করতে চান না) বলেন, হোয়াটসঅ্যাপ এখনও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়নি, সরকার দাবি করেছে হোয়াটসঅ্যাপ নিজেদের মেসেজ এনক্রিপ্ট না করুক, যাতে মেসেজ ট্রেস করা যায় তার ব্যবস্থা নিক, কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ তা মানে নি। অতএব, মন্ত্রকের উদ্বেগের কারণগুলি সমাধান করা হয়নি এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট অপব্যবহারের সম্ভাবনা এখনও রয়ে গেছে। গত মাসেই সরকার ভুয়ো খবর প্রকাশের জন্য হোয়াটসঅ্যাপের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। সরকার জানায়, দ্রুত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুল খবর বা তথ্য বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে।
তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ কখনই তার দায় এড়াতে পারে না। সরকার তার দ্বিতীয়বারের নোটিশে ফেসবুককে জানায়, খেয়াল না রাখার কারণে এই প্ল্যাটফর্মকে গুজব ছড়ানোর মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরবর্তীকালে ফেসবুক কোনো পদক্ষেপ না নিলে আইনের পথ বেছে নিতে বাধ্য হবে ভারতের বর্তমান সরকার।
তবে হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় দল গঠন করেছে তারা। অতিরিক্ত নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই আগামীকালে আপডেট করা হবে এই মেসেজিং অ্যাপ। তা যদি না করে, তাহলে ভারতে কারণে অকারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম।