ত্রিপুরার BJP শাসিত রাজ্য সরকার অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এবং অভিবাসীদের চিহ্নিত করার জন্য রাজ্যের আটটি জেলায় স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গড়ে তোলার মধ্যেই ত্রিপুরা উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদ এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে একটি বিশেষ পর্যবেক্ষক দল অথবা মনিটরিং কমিটি গড়ে তুলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে আজ জানান উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদের শাসক দল তথা রাজ্য সরকারের শাসক জোট শরিক তিপ্রা মথা প্রধান প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মা।
এক্স সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করে আজ তিনি বলেছেন, "যে সকল অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ অঞ্চলে অসদুপায়ে প্রবেশ করছে তাদের চিহ্নিত করতে এডিসি কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করার জন্য আমি অনুরোধ জানিয়েছি। যেহেতু আসাম রাজ্য থেকে অবৈধ বসবাসকারীদের বিতাড়িত করা হচ্ছে এবং তারা পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে ঢুকতে পারে সুতরাং এই বিষয়টিতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। এই কমিটিটি রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে কাজ না করে আমাদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার জন্য কাজ করা উচিত"।
প্রসঙ্গত গত দুদিনে নয়া দিল্লিতে নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডাসহ বিভিন্ন বিজেপি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে ত্রিপুরায় বিহার মডেলে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন চালু করার জন্যে আবেদন করেছেন প্রদ্যুৎ।
ত্রিপুরায় বিহার মডেল এ ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন অথবা স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন এবং অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে বুধবার নয়া দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সাথে এক বৈঠকে জোর দাবি তুলেছিলেন প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মা। বৈঠক শেষে তিনি সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে এও জানিয়েছিলেন যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তাঁদের জানানো হয়েছে, সারা দেশে ভুয়া ভোটারদের চিহ্নিত করতে এবং ভোটার তালিকার বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে বিহার মডেলের স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিশন অথবা স্যার চালু করা হবে। তবে নির্বাচন কমিশন সূত্রে তার এই দাবির যথার্থতা নিশ্চিত করা যায়নি।
আরও পড়ুন- Cyber crime: সূত্রের খবরে দুরন্ত অভিযান! আন্তঃরাজ্য সাইবার প্রতারণা চক্রের ৩ পান্ডা গ্রেফতার
এদিকে গতকাল নয়াদিল্লিতে বিজেপি প্রধান জে পি নাড্ডার সাথে পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা ক্ষেত্রের সাংসদ এবং তিপ্রা মথা দলের মন্ত্রী, বিধায়কদের সাথে নিয়ে দেখা করেন তিপ্রা মথা প্রধান প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মা। পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ থেকে রাজ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ তুলে ত্রিপুরায় ভোটার তালিকায় বিহার মডেলের বিশেষ নিবিড় সংশোধন চালু করার জন্য বিজেপি দলীয় প্রধানকে অনুরোধও জানান তারা।
ত্রিপুরার শাসক বিজেপি দলের পক্ষ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং অভিবাসন নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আশঙ্কা জানানো হলেও সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা বলেছেন যেহেতু ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে ধর্মীয় উৎপিরনের কারণে যারা ভারতে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে এসেছেন তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে, তাই মূলত ২০১৪ এর পরবর্তী সময়ে যারা অবৈধ উপায়ে ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছেন সেই সমস্ত অনুপ্রবেশকারীদেরই মূলত চিহ্নিত করার জন্য চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। শাসক জোটশরিক তিপ্রা মথা দলের পক্ষে এমন কোন দিনক্ষণ নির্ধারিত না করে দেয়া হলেও দলীয় সূত্রের খবর, ইন্দিরা মুজিব চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সাল পর্যন্তই অভিবাসীদের স্বীকৃতি দিতে ইচ্ছুক তারা।