Tripura News: ত্রিপুরার উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদ (TTAADC) এলাকায় অর্থ বরাদ্দ ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা স্পষ্ট জানালেন, "উপজাতি এলাকায় কোনো অর্থসংকট নেই।" তিনি বলেন, সম্প্রতি ১৪০০ কোটি টাকার একটি বাহ্যিকভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত প্রকল্প রাজ্যের এডিসি এলাকায় চালু করা হচ্ছে, যা উপজাতি উন্নয়নে রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়ক হবে।
শনিবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে একটি এনজিও পরিচালিত বোর্ডিং হাউসের মেধাবী উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দিতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উপজাতি এলাকায় আর্থিক অসংগতির অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন ও অপ্রয়োজনীয়। কিছু মানুষ পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে, বিধানসভায় এবং তার বাইরেও।”
তিপ্রা মোথা ও সিপিএমের বিরুদ্ধে পরোক্ষ বার্তা?
রাজনৈতিক মহলের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য মূলত তিপ্রা মোথা এবং সিপিআইএম-এর বিরুদ্ধে পরোক্ষ বার্তা। বিগত কয়েক বছর ধরে তিপ্রা মোথা দাবি জানিয়ে আসছে, রাজ্য বাজেটে উপজাতি এলাকা তথা TTAADC-র জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে না। ২০২৪ সালে এই অভিযোগ ঘিরেই রাজ্য সরকার ও তিপ্রা মথার মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছিল, যেখানে তিপ্রা মথা প্রধান প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস: রাজ্য ও কেন্দ্র পাশে আছে
ড. সাহা বলেন, “উপজাতি মানুষের কল্যাণে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার একসঙ্গে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, সড়ক পরিবহন—সবক্ষেত্রেই নানা প্রকল্প চালু আছে। বাহ্যিকভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত ১৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পও সেই ধারাবাহিকতার অংশ।”
তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকেও উপজাতি এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চালু আছে। “আমার মতে, কোনো আর্থিক সংকট নেই। অহেতুক অভিযোগ বারবার তোলা উচিত নয়,” বলে তিনি শরিক দলের অবস্থানও কার্যত খারিজ করে দেন।
উপস্থিত ছিলেন উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, বিশিষ্ট সমাজকর্মী বিপিন দেববর্মা, ও অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে তারা সকলে সমর্থন জানিয়েছেন।
উপজাতি এলাকা ও জনসংখ্যার প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, ত্রিপুরার ১০,৪৮৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ অঞ্চল TTAADC-এর অধীনস্থ, যেখানে ১৯টি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। যদিও জনসংখ্যার নিরিখে ত্রিপুরার প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত।
আরও পড়ুন: বিরাট জালিয়াতিতে পুলিশের জালে সাইবার প্রতারণার 'মাস্টারমাইণ্ড', কলকাতায় বসে কীভাবে চলত কারবার?