করোনাভাইরাস মহামারী জনিত লকডাউনের আবহে নজির গড়ল ত্রিপুরার উদয়পুর শহরের দুই খুদে বাসিন্দা। দুজনেই তাদের 'লক্ষ্মীভাণ্ডে' জমানো সবটুকু সঞ্চয় তুলে দিল মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে।
পাঁচ বছরের তিতাস দেবনাথের পরিবারে রয়েছেন তার দাদু-দিদিমা এবং মা। তার অনুপ্রেরণা তার দিদিমা, বলছে তিতাস, যিনি স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়তের সদস্যা। "আমার দিদা সমানে গরীব মানুষদের টাকা আর অন্যান্য জিনিস দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস লকডাউনের সময় আমাদের এখানে গরীব মানুষদের মাঝে কাজ করছে। তাই আমার লক্ষ্মীভাণ্ডে যত টাকা জমেছে, আমি সেটা দিতে চেয়েছিলাম। আমার বন্ধুকে দিয়ে দিয়েছি টাকা," ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানায় তিতাস।
স্থানীয় একটি করোনা ত্রাণ অনুষ্ঠানে তিতাসের টাকা তুলে দেওয়া হয় কৃষিমন্ত্রী প্রাণজিৎ সিংহ রায়ের হাতে।
আরও পড়ুন: লকডাউন পরবর্তী ‘ভাবনা’ চাইলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী, সেরা ১০০ কার্যকর হবে রাজ্যে
একইভাবে উদয়পুর শহরের চানবান এলাকার বাসিন্দা ১১ বছরের অগ্নিভ দত্ত বলছে, টিভিতে করোনা তহবিলের জন্য টাকা তোলার খবর দেখে তার মাথায় আসে টাকা দান করার কথা।
"আমি প্রথমে আমাদের এখানকার হাসপাতালে টাকা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাবা বলল প্রশাসন বা সরকারকে টাকাটা দিতে। তাই মন্ত্রী প্রাণজিৎ সিংহ রায় যখন আমাদের এখানে একটি অনুষ্ঠানে এলেন, আমি তাঁর হাতেই টাকা দিয়ে দিলাম," জানাচ্ছে অগ্নিভ।
অগ্নিভর বাবা সলিল দত্ত শহরে একটি ছোটখাটো মুদিসদাই এবং রেপ্রোগ্রাফিক্স-এর দোকান চালান।
এই দুই খুদের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের কথা সকলকে জানান ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব স্বয়ং।
তাঁর ফেসবুক পেজে বিপ্লববাবু লেখেন, "আমার ক্যাবিনেট সহকর্মী শ্রী প্রাণজিৎ সিংহ রায় আমার হাতে দুটি লক্ষ্মীভাণ্ড তুলে দিয়েছেন। এই দুটি তাঁকে দিয়েছে পাঁচ বছরের তিতাস দেবনাথ, এবং পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র অগ্নিভ দত্ত, তাদের সঞ্চিত টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা করার জন্য। আমি তাদের এই চিন্তাকে ধন্যবাদ জানাই, এবং কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের অভিভাবকদের, তাদের মধ্যে এই সংস্কার গড়ে তোলার জন্য। যে সেবার মনোভাব এরা দেখিয়েছে, তা ত্রিপুরার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। মহামারীর এই কঠিন সময়ে এই দুই খুদের এমন পদক্ষেপ প্রশংসনীয় এবং আশা জাগানোর মতো।"
অন্যদিকে রাজ্যের আইন মন্ত্রী রতনলাল নাথ জানিয়েছেন যে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এখন পর্যন্ত জমা পড়েছে ৮ কোটি টাকার কিছু বেশি।