সাপের শ্বেতী হয়? সেই প্রশ্নেই ভ্রু কুঁচকাচ্ছে নেট দুনিয়া থেকে এলাকাবাসী। সম্প্রতি ক্ষতবিক্ষত শাঁখামুটি সাপ উদ্ধার করা হয়েছে ব্যান্ডেলে সরস্বতী নদীর ধার থেকে। কিন্তু এমন অদ্ভুত দেখতে কেন সাপটিকে?
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ব্যান্ডেল মেরীপার্কের বাসিন্দা চন্দন ক্লেমেণ্ট সিং। তিনি জানিয়েছেন, সাপ নিয়ে তাঁর দীর্ঘদিন ধরে চর্চা। বিভিন্ন জায়গায় সাপ ধরতে তাঁকে ডাকা হয়। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পেশাদারী কায়দায় তিনি সাপ ধরেন। সাপকে উদ্ধার করে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পরিচর্যাও করেন তিনি। সাপ সুস্থ হলে তাঁকে জঙ্গলে ছেড়ে দেন। কিছু সময় বন দফতরের হাতে তুলে দেন। তিনি জানিয়েছেন সাপটির গায়ে শ্বেতী হয়েছে।
আরও পড়ুন:১০ টাকায় ১৭ টা ফুচকা খাইয়ে কন্যা সন্তানের জন্মদিন পালন করলেন ফুচকা বিক্রেতা
সাধারণত, এই প্রজাতির সাপের গায়ে হলুদের ওপর কালো দাগ হয় কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে হলুদ আর সাদা ছোপ ছোপ । তাঁর মতে এটা জিনগত সমস্যা। সাপটি শ্বেতী রোগে আক্রান্ত। তিনি যে যুক্তি দিয়েছেন তা হল, শুধু গায়ের রংই নয়, সাপটির জিভ আর চোখেও সমস্যা আছে। সম্প্রতি এক সকালে চন্দন ব্যান্ডেল থেকে বাইকে করে পোলবা যাচ্ছিলেন, যাওয়ার পথে সরস্বতী নদীর ধারে তিনি লক্ষ্য করেন ফাঁদি জালে একটি সাপ আটকে রয়েছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সাপটিকে উদ্ধার করেন। সাপটির দেহে বিভিন্ন জায়গায় কেটে গিয়েছে, তখন তিনি তাঁকে বাড়ী নিয়ে যান।
আরও পড়ুন:চিতাবাঘের সঙ্গে গোসাপের লড়াই, জিতল কে? দেখুন ভিডিও
চন্দন জানিয়েছে, যখন বাড়ী নিয়ে এলাম গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বুঝলাম সাপ টি শ্বেতী রোগে আক্রান্ত এবং এটি বিরল প্রজাতি। যেটুকু জানি তা থেকে আমার মনে হয়েছে অ্যালভিনো ব্যান্ডেড ক্রেইট এই সাপটি। কিন্তু কালোর বদলে সাদা রং কেন? চন্দন জানান, এটা মিউটেশনের জন্য হয়। যে পিগমেন্ট গুলো শরীরে রং আনতে সাহায্য করে তার কোনো একটা ব্যাতিক্রম রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সাপটির আরও কিছু বৈচিত্র্য আছে যেমন সাপটির চোখ লাল। অর্থাৎ আমরা যেটা দেখছি সেটা রেটিনা। বাইরের অংশে যে কালো মেমব্রেন থাকে সেটা তৈরী হয়নি। এছাড়াও তার জিভের সামনের অংশ গোলাপী আর তারপরে সাদা। সাধারণত জিভ কালো হয়। এই জিনগত পরিবর্তনের জন্য সাপটির আচরণে তারতম্য ঘটে গিয়েছে। পাঁচ ফুটের সাপটি আপাতত পরিচর্যায় আছে চন্দনের বাড়িতে। সুস্থ করে তাঁকে নিরাপদ স্থানে ফিরিয়ে দেওয়াই এখন সর্পবিশারদ চন্দন ক্লেমেণ্ট সিংয়ের লক্ষ্য॥