মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি সিএনএন-এর লোগো এবং 'টিকার' সম্বলিত একটি অদ্ভুত ভিডিও টুইট করেছেন এই দাবি সমেত, যে ওই সংবাদমাধ্যম একটি ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে ভ্রান্ত রিপোর্ট দিয়েছে। জবাবে তাঁর ভিডিওটিকে "ম্যানিপুলেটেড মিডিয়া", অর্থাৎ 'বিকৃত মাধ্যম' আখ্যা দিয়েছে টুইটার, এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর 'অসংবেদনশীল' আচরণের জন্য প্রভূত সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভাইরাল হয় মূল ভিডিওটি, যার একটি বিকৃত সংস্করণ শেয়ার করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি।
এই বিকৃত সংস্করণের জন্য দায়ী @CarpeDonktum ছদ্মনামের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক টুইটার ব্যবহারকারী, যিনি নিজেকে ট্রাম্প সমর্থক বলে দাবি করেন।
ভিডিওটি দেখলে মনে হবে, এটি সিএনএন-এর প্রতিবেদন, যাতে দুটি শিশুকে ফুটপাথে ছুটতে দেখা যাচ্ছে। স্ক্রিনের নীচের অংশের 'টিকার' বলছে: "বর্ণবিদ্বেষী শিশুর কাছ থেকে পালাচ্ছে আতঙ্কিত আরেক শিশু"। প্রসঙ্গত এখানে শিশু বলতে ইংরেজিতে 'toddler' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু ভুল বানানে। ভিডিওতে 'ফেক নিউজের' বিরুদ্ধে অভিযোগও করা হয়েছে, মিথ্যা খবর প্রচার করার।
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) June 19, 2020
মূল ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন ওই দুটি শিশুর একজনের বাবা, যার ফলে ইন্টারনেট দুনিয়ায় বিখ্যাত হয়ে যায় ফিনেগান এবং ম্যাক্সওয়েল নামের শিশু দুটি। আসল ভিডিওতে দেখা যায়, দুজনে একে অপরের দিকে ছুটে আসছে, এবং একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে একসঙ্গে ছুটে চলে যাচ্ছে।
সিএনএন-এর সাংবাদিক সহ একাধিক সংবাদমাধ্যম ট্রাম্পের টুইট নিয়ে খবর করার সময় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয় যে এটি ভুয়ো। এর অল্প পরেই টুইটের সঙ্গে সতর্কতা বার্তা যোগ করে টুইটার। এই নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে ট্রাম্পের একাধিক টুইটের সত্যতা সম্পর্কে হুঁশিয়ারি জারি করল টুইটার। এর আগে আরও একটি ভুয়ো টুইট সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে দেয় টুইটার, এবং সম্প্রতি ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী প্রচার অভিযানের পক্ষ থেকে জর্জ ফ্লয়েড-এর স্মৃতির উদ্দেশ্যে পোস্ট করা একটি ভিডিওকে ডিলিট করে দেয়।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের পোস্ট মুছে ফেলার পেছনে ঠিক কী কারণ দেখাল টুইটার?
ট্রাম্পের টুইট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিয়ে সিএনএন-এর অফিশিয়াল টুইটার পেজে লেখা হয় যে তারা ঘটনাটি ঠিক যেমন ঘটে, তেমনই রিপোর্ট দিয়েছিল, এবং মিডিয়াকে আক্রমণ করতে নিষ্পাপ শিশুদের ব্যবহারের নিন্দা করে। তারা ট্রাম্পের উদ্দেশে এও বলে যে তিনি যেন "আরও ভালো হন"। সিএনএন-এর পোস্টে লেখা হয়, "আমরা সঠিক তথ্য নিয়েই কাজ করে যাব, নিষ্পাপ শিশুদের ব্যবহার করে এমন ভুয়ো ভিডিও টুইট করব না। একই কাজ করতে বলব আপনাকেও। আরও ভালো হন।"
CNN did cover this story - exactly as it happened. Just as we reported your positions on race (and poll numbers). We’ll continue working with facts rather than tweeting fake videos that exploit innocent children. We invite you to do the same. Be better. https://t.co/T1nBtejZta
— CNN Communications (@CNNPR) June 19, 2020
ট্রাম্পের এই টুইট ক্ষেপিয়ে তুলেছে অনেক আম নাগরিককেও। অনেকেই জানতে চেয়েছেন, ট্রাম্প কি বলতে চান আমেরিকায় বর্ণবিদ্বেষের কোনও অস্তিত্ব নেই? অনেকেই ভিডিওটি ডিলিট করার দাবিও জানিয়েছেন।
Only you would take what is a beautiful example of love (showing racism is a learned behavior) & turn it into a pathetic attack on so-called "fake news" designed to discredit legitimate journalism. Bonus: Misspelling "Toddler" in the chyron is so on-brand! #SAD #LoserTrump https://t.co/y81hWhmCXD
— Mark Hamill (@HamillHimself) June 19, 2020
The President of the United States just sent out this tweet.
We are beyond the Twilight Zone now.
This is complete insanity. https://t.co/5LxigzvTH9
— Don Winslow (@donwinslow) June 19, 2020
So, basically Trump is trying to convince us that racism in the US is just fake news. https://t.co/69auLsueSt
— Carlos Latuff (@LatuffCartoons) June 19, 2020
can someone please take his phone https://t.co/s92RuQSYa4
— philip lewis (@Phil_Lewis_) June 19, 2020
টুইটার তাঁর টুইটের তথ্য যাচাই করতে শুরু করার পর ট্রাম্প হুমকি দেন যে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিকে বন্ধ অথবা সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন করে দেবেন তিনি। এর পর তিনি একটি নির্দেশে সইও করেন, যার দ্বারা কোনও সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটে যা পোস্ট করা হয়, তার দায় এড়াতে পারবে না সংশ্লিষ্ট সংস্থা। এই নির্দেশের ফলে আমেরিকার রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রকদের হাতে বাকস্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার অভিযোগে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন