করোনা মহামারী, লকডাউন এই দিনগুলো আমাদের জীবনকে আমূল বদলে দিয়েছে। সারাদিন ঘরবন্দি, টিভি আর মোবাইলে বুঁদ হয়েই অধিকাংশের সেই সময় পার হয়েছে। তবে জানেন কী সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে আস্ত এক বিমান তৈরি করে ফেলেছেন কেরলের এক যুবক! হ্যাঁ চমকে উঠলেও এটাই সত্যি।
Advertisment
লকডাউনে চার আসনের একটি বিমান তৈরি করে তাক লাগিয়েছেন কেরলের আলাপ্পুঝারের বাসিন্দা অশোক থামরাক্ষণ। প্রাক্তন বিধায়ক এভি থামরক্ষনের ছেলে তিনি। পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। ২০০৬ থেকেই বিলেতে থাকতে শুরু করেন। পরিবার বলতে স্ত্রী আর দুই মেয়ে। বিলেতে থাকার সময় থেকেই নিজের একটি বিমানের শখ ছিল অশোকের।
বিলেতে থাকার সময় সেই শখ পূরণের জন্য নিজে বিমান চালানোও শিখেছেন। অশোকের কথায়, “বিমান চলানোর লাইসেন্স পাওয়ার পর থেকে নিজস্ব বিমানের বিষয়ে ঝোঁকটা অনেক বেড়ে গেল। একটি ছোট বিমান কিনতে খরচ পরে ৫ থেকে ৬ কোটি। ব্রিটেনে বিমানের যন্ত্রাংশ তুলনামূলকভাবে সহজলভ্য এবং কিছুটা সস্তাও। তাই আমি নিজেই বিমান বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি”।
১৮ মাসের চেষ্টায় ৪ আসনের একটি বিমান গড়েও ফেলেন তিনি। সবে সেই সময় করোনা থাবা বসাতে শুরু করেছে। বিশ্বজুড়ে একের পর এক দেশ লকডাউনের ঘোষণা করেছে। ফলে কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল অশোকের পক্ষে। ইউকে অ্যাভিয়েশনের তরফে বিমান তৈরির প্রতিটি ধাপে নজর রাখা হয়েছিল।
অবশেষে বিমান তৈরির পর বর্তমানে তাঁকে তাঁর তৈরি বিমান চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর ছুটির সময়ে পরিবারকে নিয়ে অশোক উড়ে যান দেশ বিদেশে। ইতিমধ্যেই ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় এই বিমানেই পরিবারের সঙ্গে ঘুরেও এসেছেন অশোক।
নিজের তৈরি বিমানে দেশ ভ্রমণ অনেকটাই যেন স্বপ্নের মতই। বিমানটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ১.৮ কোটি টাকা। অশোকের জানিয়েছেন, “এমনিতে চার আসনের বিমান খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার। তাই আমি চার আসনের বিমান বানানোর সিদ্ধান্ত নিই”। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে থামরক্ষণ বিমান তৈরির কাজ শেষ করে। এবং সেই মাসেই পরিবারের সঙ্গে পাড়ি দেন দেশ ভ্রমণে। আপাতত ছুটি কাটাতে কেরলে নিজের বাড়িতেই রয়েছেন অশোক।