সেকেন্দ্রাবাদ-বিশাখাপত্তনম দুরন্ত এক্সপ্রেসে প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এক মহিলা। চলন্ত ট্রেনে কী করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছিলেন না মহিলার সঙ্গে থাকা পরিবারের লোকজন এবং তার স্বামী। সেই সময় সাক্ষাৎ ঈশ্বর হয়ে হাজির হলেন বছর ২৩ এর এক মেডিক্যাল পড়ুয়া। মহিলাকে সাহায্যে এগিয়ে আসেন তিনি। সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে মহিলা জন্ম দেয় এক শিশু কন্যার। এই ঘটনায় ২৩ বছর বয়সী মেডিকেল পড়ুয়া সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম জুড়ে সকলের মন জয় করছে। খবর অনুসারে জানা গিয়েছে মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ট্রেনে সহযাত্রীর এমন অবস্থায় মেডিকেল ছাত্রী কে স্বাথি রেড্ডি, গর্ভবতী শ্রীকাকুলামকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন। তার সঙ্গে ছিল না কোন চিকিৎসা সরঞ্জাম। তা সত্ত্বেও নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সুস্থভাবে সন্তানকে ভুমিষ্ঠ করার জন্য তার দক্ষতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা। অন্ধ্রপ্রদেশের একটি মেডিক্যাল কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী কে স্বাথি রেড্ডি।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় রেড্ডি বলেন, “ট্রেনের এসি থ্রি-টায়ার বগিতে ঘটে এই ঘটনা। যেখানে তার সঙ্গেই ভ্রমণ করছিলেন ওই মহিলা অ তার পরিবার। তার কথায়, “আমি প্রথমে মহিলাকে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি এর আগে কখনও কোন ডেলিভারি করিনি। কেবল পুঁথিগত বিদ্যাকেই এখানে কাজে লাগাতে পেরেছিলাম। তবে মনকে শক্ত করেছিলাম, আমাকে পারতেই হবে! অবশেষে আমি পেরেছি। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছে”।
আরও পড়ুন : < বুড়ো হাড়ের ভেলকি! মেট্রো স্টেশনে নাচ দিদিমার, ‘ড্যান্সিং স্টারে’র নাচে বুঁদ নেটদুনিয়া >
রেড্ডি আরও জানিয়েছেন “মহিলার প্রসব বেদনা সকাল সাড়ে তিনটে নাগাদ শুরু হয়েছিল শিশুটি ভোর ৫টা ৩৫ এ ভুমিষ্ঠ হয়। কন্যা সন্তানের জন্মের পরেও, দম্পতিকে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কারণ বিজয়ওয়াড়া এবং বিশাখাপত্তনমের মধ্যে ট্রেনের কোনও স্টপেজ ছিল না”।
রেড্ডি বলেন “নবজাতকদের উষ্ণতায় রাখা উচিত। কিন্তু এটি একটি এসি বগি ছিল। যাত্রীরা তাদের কম্বল দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। যাত্রীরা সকলেই এগিয়ে আসেন, এবং বগিটিকে একটি অস্থায়ী ডেলিভারি রুমে বদলে ফেলা হয়”।
পরে, আনাকাপল্লি স্টেশনে একটি অ্যাম্বুলেন্স তৈরি রাখা হয়, মা এবং নবজাতককে তাতে চাপিয়ে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষার পর ডাক্তাররা জানান মা ও সন্তান দুজনেই ভাল আছেন।
এই ঘটনা ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। ভাইরাল হতেই রেড্ডি সোশ্যাল মিডিয়া এবং ব্যক্তিগতভাবেও ব্যাপক প্রশংসা পায়। তার কলেজ থেকে সকলেই তার এই কাজের জন্য রেড্ডিকে শুভেচ্ছাও জানায়।
মেডিকেল কলেজের তরফেও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে গিয়ে রেড্ডির একাজের প্রশংসা করা হয়েছে। কলেজের তরফে তার টুইটার হ্যান্ডেলে এক টুইট বার্তায় লেখা হয়, "আমাদের জিআইএমএসআর ছাত্রী স্বাথি রেড্ডি ,যার সাহস এবং দক্ষতায় চলন্ত ট্রেনে কোনও জটিলতা ছাড়াই একটি ফুটফুটে সুস্থ শিশু কন্যার জন্ম হয়েছে। আমরা ওর এই কাজে সম্মানিত একই সঙ্গে অভিভূত।