কখনও কুলির কাজ করেছেন বাবা, কখনও সংসারের তাগিদে চালিয়েছেন রিক্সাও! কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন ছেলে কমলেশ কুমারকে। বিহারের সিরহানা জেলার কমলেশ চলতি বছর বিহার জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় ৬৪ তম স্থান অর্জন করে সকলকে তাক লাগিয়েছেন। রিক্সাচালকের ছেলে হয়েও কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের জেরে এই অসাধ্যকে সাধন করেছে কমলেশ।
জীবিকার সন্ধানে সপরিবারে দিল্লি চলে যান বাবা। তখন কমলেশ সবেমাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছে। সেই থেকে দিল্লিতেই বাস কমলেশের। লাল কেল্লার পিছনে একটি বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন তিনি। বস্তির ১০ বাই ১০ ঘরে থেকে চালিয়ে গিয়েছেন পড়াশুনা। পরে উচ্ছেদের পর ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন কমলেশের পরিবার। শৈশবের দিনগুলোর কথা মনে করে এখনও চোখে কল আসে কমলেশের।
চাঁদনী চক এলাকায় এক পুলিশকর্মী্র সঙ্গে কমলেশের বাবার কথাও কাটাকাটি হয় একবার, পুলিশকর্মী সকলের সামনেই বাবাকে চড় মারেন। সঙ্গে ছিল সেদিনের ছোট কমলেশ। সেই ঘটনার পরই বিচারক হওয়ার জেদ চাপে কমলেশের মনে। ভাবনা অনুযায়ী শুরু করেন কঠোর পরিশ্রম- অধ্যাবসায়। অবশেষে সাফল্য ছুঁয়ে স্বপ্ন সফল কমলেশের।
আরও পড়ুন : < ‘ঝরঝরে’ একতারায় সুরের ‘জাদু’, বিস্ময়প্রতিভাকে কুর্নিশ নেটপাড়ার >
দ্বাদশ পাশ করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন কমলেশ। ২০১৭ সালে, কমলেশ উত্তরপ্রদেশে এবং তারপরে বিহার জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন। অতিমারী পরিস্থিতিতে কমলেশের তিন বছর নষ্ট হলেও, চেষ্টায় কোন ছেদ পড়েনি কমলেশের। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ! বিহার জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হতেই কমলেশ জানতে পারেন তিনি ৬৪ তম স্থান অর্জন করে পরীক্ষায় পাস করেছেন। বাবাকে এই আনন্দ সংবাদ জানাতেই গর্বে বুক ভরে ওঠে তাঁর। আর ছেলের সাফল্যের এই কাহিনী এখন ভাইরাল নেটপাড়ায়।