Advertisment

সিনেমার স্ক্রিপ্টকেও হার মানাবে রুঢ় বাস্তব, দুধের সন্তান কোলে টোটো হাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মা!

জীবন যুদ্ধ হার না মানা এই কাহিনী এখন রীতিমত ভাইরাল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Noida news, Noida latest news, Noida news live, Noida news today, Today news Noida,women driver in noida,noida news,noida chanchal,chanchal sharma

সিনেমার স্ক্রিপ্টকেও হার মানাবে কঠিন বাস্তব, দুধের সন্তান কোলে টোটো হাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মা !

এ যেন এক সিনেমার স্ক্রিপ্ট! কোলে দুধের সন্তান আর সংসার চালাতে ই-রিকশা চালাচ্ছেন এক মহিলা। ব্যস্ত রাস্তায় এমন ছবি দেখে প্রথম প্রথম কয়েকজন হতচকিত হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এটাই এখন ওই মহিলার প্রতিদিনের রুটিন। সকাল হলেই সন্তান কোলে বেরিয়ে পড়েন পেটের তাগিদে। রাত নামলে আবার ঘরে ফেরা। জীবন যুদ্ধ হার না মানা এই কাহিনী এখন ভাইরাল। এমন গল্পে চোখের কোনে জল নেটিজেনদের।

Advertisment

নয়ডার এই 'সিঙ্গল মাদারের' গল্প এখন অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা। সকাল ৬.৩০ এ তার দিন শুরু। সারাদিন টোটো চালিয়ে বিকেলে কিছু সময়ের জন্য বাড়ি আসা। আবার স্নান-খাওয়া করে রাস্তায় রাস্তায় দুটো পয়সার জন্য ঘুরে বেড়ানো!  সঙ্গে সব সময়ের জন্য রয়েছে একটা দুধের বোতল। খিদে পেলে গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে সন্তানকে দুধ খাইয়ে ক্ষুধা নিবারণ। আবার শুরু পথ চলা। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজিক্যালস থেকে লেবার চকের মধ্যে চলে 'চঞ্চলের' এই ই-রিকশা ।

নয়ডার ২৭ বছর বয়সী চঞ্চলা শর্মার যন্ত্রণা দেশের লক্ষাধিক কর্মজীবী মায়ের যন্ত্রণাকে ফুটিয়ে তুলেছে। গত বছর, ছেলে অঙ্কুশের জন্মের দেড় মাস পরে, চঞ্চলা চাকরি খুঁজতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু পাননি। পরে তিনি একটি ই-রিকশা কেনেন। চঞ্চলা বলেন, 'চাকরি না পেয়ে অনেক ভেবেই এই ই-রিকশা কিনি যেখানে আমি আমার সন্তানকে কাছে রাখতে পারব'। 

আরও পড়ুন : < পরপর চোয়ালে কামড় পিটবুলের, ভয়ঙ্কর ভিডিও দেখে আঁতকে উঠছেন সকলেই >

কাজের প্রতি চঞ্চলা নিবেদিতপ্রাণ। যে রুটে তিনি ই-রিকশা চালাচ্ছেন সেখানে তিনিই একমাত্র মহিলা ই-রিকশা চালক। প্রথমে অনেকে বাঁকা চোখে দেখলেও এখন তাঁর জীবন সংগ্রামকে কুর্নিশ জানিয়েছে তারা সকলেই। তিনি বলেন, “আমার গাড়িতে সওয়ার যাত্রীরা সবাই আমার উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। মহিলা যাত্রীরাও আমার ই-রিকশাতে উঠতেই বেশি পছন্দ করেন”।

চঞ্চলা তার স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। চঞ্চলার কথায়, "আমি ছেলে অঙ্কুশকে বাড়িতে রেখে কোথাও বেরোতে পারিনা। আমার মা সবজি বিক্রি করেন। আমার ভাই খুব কমই বাড়িতে থাকে। তাই গাড়ি চালানোর সময় আমাকে আমার ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বেরোতে হয়। চঞ্চলার তিন বোন থাকলেও তারা বিবাহিত। বাড়িতে কেউ-ই থাকেন না। কার কাছে ছেলেকে রেখে বেরোবো"। মাধ্যমিক পাশ চঞ্চলা, এখন দিনে ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা রোজগার করেন। তাই দিয়েই চলে মা ছেলের 'সুখের সংসার'। তার মধ্যে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা ঋণের বোঝাও রয়েছে মাথার ওপরে।

চঞ্চল বলেন, 'প্রচণ্ড গরমে ছেলেকে  মায়ের কাছে রেখে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, ও তো ছোট, কতক্ষণ মা'কে ছেড়ে থাকতে পারবে। তাই ওকে আমার সঙ্গেই রাখি। আমি চাই একটি দোকান খুলতে কিন্তু তা খুলতে যে পুঁজির দরকার তা আমার কাছে নেই। অগত্যা আমার ভরসা আমার এই ই-রিকশা। এতেই মা-ছেলের স্বপ্ন বোনা শুরু”।

Noida viral
Advertisment