দারিদ্র্য ও মেধার মধ্যে যে কোনো সম্পর্ক নেই তার প্রমাণ আবারও মিলেছে। ওডিশার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামের দরিদ্র পড়ুয়ার সাফল্যে খুশির হাওয়া গোটা গ্রাম জুড়েই। দেশের কাছে গ্রামের নাম উজ্জ্বল করেছে। মেডিকেল এন্ট্রান্স পরীক্ষায় তাদের বিরাট কৃতিত্ব দেখিয়েছে। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে নিট পরীক্ষায় অসামান্য কৃতিত্ব তাক লাগিয়েছে সকলকেই। এই সাফল্য প্রমাণ করেছে দারিদ্র্য ও আর্থিক অনটন সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। তাদের সন্তানদের সাফল্য দেখে খুশি তাদের অভিভাবকরা।
তাদের মধ্যে একজন পেশায় দিনমজুর বাবার ছেলে এবং অন্যজন সবজি বিক্রেতার মেয়ে উভয়েই NEET 2022-এ ভাল র্যাঙ্ক অর্জন করেছে । গঞ্জাম জেলার পোলসারা থেকে শান্তনু দলাই পরীক্ষায় ১৯,৬৭৮ তম স্থান পেয়েছে। গজপতি জেলার আদাভা গ্রামের ইশ্রিতা পান্ডা ১১,৮৯৫ তম স্থান অর্জন করেছে। দুজনের কেউই সেভাবে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছ্বল নয়। তাদের দুজনে আবার প্রথম বারের চেষ্টায় নিট পাশও করতে পারেননি। জেদ আর অধ্যাবসায়কে সম্বল করেই নজরকাড়া সাফল্য পুত্রকন্যার
এই দুই প্রার্থীই গত বছর প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। যদিও তখন তারা পাশ করতে পারেনি। তাই বলে হাল ছাড়েনু। এবার তারা তাদের মেধা প্রমাণ করেছে। ইশ্রিতার বাবা সবজি বিক্রি করে সংসার চালান।
তিনি বলেন, “মেয়েকে ডাক্তার হতে দেখা তার স্বপ্ন । তিনি তার মেয়ের এক সাফল্যে রীতিমত গর্বিত। তিনি বলেন, মেয়ে আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চলেছে। তিনি জানান, কোভিড মহামারির কারণে আর্থিক সংকট থাকায় ব্যবসায় ভালো লাভ না হলেও মেয়ের লেখাপড়ায় যথেষ্ট উৎসাহ দিয়েছেন তিনি। তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে তিনি তার মেয়ের পড়াশোনার সঙ্গে কখনও আপোষ করেননি তিনি। ইশ্রিতা নিটে ৬২২ নম্বর পেয়েছে।
আরও পড়ুন: < পার্কেই শিশুর চোয়াল ছিঁড়ে খেল পিটবুল, ক্ষতবিক্ষত মুখে পড়ল ২০০ সেলাই >
অন্যদিকে পেশায় দিনমজুরের ছেলে শান্তনু দালাইও কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং NEET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তিনি জানান, আর্যভট্ট নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে কোচিং নেন। অধ্যাপক সুধীর রাউত বলেন, ইনস্টিটিউট তার পাশে দাঁড়িয়েছে। ওড়িশার কোনও সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য তিনি এখন চেষ্টা চালাচ্ছেন। শান্তনুর সাফল্যে খুশি তার বাবা।
ওড়িশার এই পরীক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে যে আপনি যদি একটি লক্ষ্য নিয়ে জীবনের পথে এগোন এবং কঠোর পরিশ্রম করেন তবে অবশ্যই সাফল্য আসবে। শান্তনু ও ইশ্রিতার কথায়,
লক্ষ্যে পৌঁছাতে অধ্যবসায় ও পরিশ্রমই যথেষ্ট। প্রসঙ্গত, সর্বভারতীয় নিট এবারও সাফল্যের ধারা ধরে রেখেছে পশ্চিমবঙ্গ। পরীক্ষায় ২২তম স্থান দখল করে শিরোনামে মহিষাদলের দেবাঙ্কিতা বেরা। রাজ্য়ের নিরিখে তাঁর র্যাঙ্ক তৃতীয়।