ছেলের জন্মদিনে ভিখারিদের খাইয়ে কুর্নিশ আদায় করলেন মা। এমনই এক ঘটনা এবার ভাইরাল ফেসবুকে। জানা গিয়েছে কলকাতার বাসিন্দা সুপর্না পাল তার ছেলে সাগ্নিক পালের জন্মদিন উপলক্ষে ‘অন্নপূর্না সরাইঘরের’ খাবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। অন্নপূর্না সরাইঘরের কর্ণধার পাপিয়া কর একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সুপর্ণা দেবীকে।
Advertisment
পাপিয়া কর, এই নামটা সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে আজ সর্বজনবিদিত। সামাজিক নানান উন্নয়ন মূলক কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন পাপিয়া দেবী। দুস্থের ‘সান্টা ক্লজ’ হিসাবেও পরিচিত তিনি। ১৩ বছর ধরে অভুক্তদের মুখে অন্ন তুলে দেন রানাঘাটের পাপিয়া কর। তার এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে এসেছে। রানাঘাট স্টেশন চত্বরে অভুক্ত মানুষদের কাছে স্বয়ং ‘ঈশ্বর’ পাপিয়া কর। সেদিন শীতের রাতে ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাত তখন প্রায় ১টা! চেনা মানুষগুলোর জন্য আলাদা করে তুলে রাখা খাবার মুখে তুলে দিতে হাজির হয়েছিলেন দুস্থের ‘সান্টা ক্লজ’ পাপিয়া।
কেবল অভুক্ত মানুষদের মুখে খাবার তুলে দেওয়া নয়, সপ্তাহে একদিন রবিবার, কলকাতার রাস্তার পথ শিশুদের পড়াশোনা এবং হাতের কাজের নানা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন তিনি। সময়টা ২০০৮ সাল। রানাঘাট স্টেশনে এক ভিখারি পাপিয়ার কাছে সামান্য কিছু খেতে চায়, সেই সময় তাঁর কাছে খাবার না থাকায় তিনি ওই অভুক্ত ভিখারিকে ১০ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন। সেই থেকে শুরু পথ চলা।
সামান্য ১০ টাকা সেই মানুষটিকে যতটা খুশি করেছিল তা দেখে পাপিয়া স্থির করেন সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির পাশে দাঁড়িয়ে কিছু করতেই হবে। ভাবনা অনুযায়ী তিনি নেমে পড়েন তাঁর লক্ষে। পাপিয়ার কথায়, এইকাজে তাঁকে সব সময় অনুপ্রেরণা দেন তাঁর স্বামী।‘অন্নপূর্না সরাইঘরের’পক্ষ থেকে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সবসময়ই সকলকে পাশে থাকার আহ্বান জানানো হয়।
এবার সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ছেলের জন্মদিন একটু অন্যরকম ভাবে পালন করতে চেয়েছিলেন কলকাতার বাসিন্দা সুপর্না দেবী। পাপিয়া দেবীর কর্মকাণ্ড তাঁকে বেশ অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি যোগাযোগ করেন পাপিয়াদেবীর সঙ্গে। জানান তার মনের ভাবনা। ভাবনা অনুযায়ী গোটা ‘অন্নপূর্না সরাইঘরের’ টিম পাশে থেকে তার এই ভাবনার বাস্তবায়িত করে। আর তপ্ত দুপুরে ভরপেট খেয়ে মা-ছেলেকে দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করেছেন স্টেশন চত্বরে থাকা অভুক্ত মানুষগুলো। আর দুঃস্থ মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুশি পাপিয়া দেবীও।