সাফাইকর্মী থেকে ব্যাঙ্কের এজিএম! প্রতীক্ষা টন্ডওয়ালকারের এই গল্প যেন বাস্তবের রূপকথাকেও হার মানাবে। অদম্য জেদ আর কঠোর পরিশ্রমের ফলেই ৩৭ বছরে ব্যাঙ্কের সাফাইকর্মী থেকে হয়ে উঠেছেন অ্যাসিট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার।
কীভাবে হল এই অসাধ্য সাধন? মাত্র ১৭ বছর বয়সেই বিয়ে হয়ে পেশায় ব্যাঙ্ককর্মীর সঙ্গে। আর তার এক বছর পরেই কোল আলো করে আসে সন্তান। মাত্র ২০ বছর হারান স্বামীকে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে প্রতীক্ষার। তারপর থেকেই শুরু হয় হার না মানা লড়াই। সেভাবে পড়াশুনা না জানায় স্বামীর ব্যাঙ্কেই সুইপারের কাজ পান তিনি। সন্তান-বাড়ি সামলে ব্যাঙ্কের কাজ করে বাড়ি ফিরে রাতে শুরু পড়াশুনা। পাশ করেন মাধ্যমিক।
ব্যাঙ্ককর্মীদের সাহায্য নিয়েই দেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা তাতেও পাশ করার পর ব্যাঙ্কের ক্লার্ক শিপ পরীক্ষা! একের পর এক সিঁড়ি উঠতে থাকেন প্রতীক্ষা। ১৯৯৫ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক হন তিনি। এখানেই থেমে থাকেননি, গ্রাজুয়েশনের পর প্রবেশানরি অফিসার পদে পরীক্ষাতেও আসে সাফল্য।
প্রথমেই স্কেল ৪। তারপরে ধাপে ধাপে পদোন্নতি। সিজিএম থেকে শেষ পর্যন্ত এজিএম পদে উন্নীত হন বছর ৫৮ এর প্রতীক্ষা। এখনও লড়াই জারি রেখেছেন তিনি। আর মাত্র দু বছরের মাথায় অবসর। লক্ষ্য ব্যাঙ্কের সর্বোচ্চ পদে বসার। প্রতীক্ষার দৃঢ় সংকল্প, নিষ্ঠা এবং সত্যিকারের অধ্যবসায়ের কারণে, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াও তাকে তার অসামান্য কৃতিত্বের জন্য সম্মানিত করেছে।
আরও পড়ুন: <একশো’তে ১৫১, মার্কশিট হাতে পেয়েই চোখ কপালে ছাত্রের>
প্রতীক্ষার এই গল্প ব্যতিক্রমী মহিলারা সমাজের সঙ্গে হার না মানা লড়াইয়ের গল্প। সামাজিক দমন-পীড়নের শিকার হয়ে কত মহিলা নিজেদের শেষ করে দেন। এই গল্প তাদের কাছে অনুপ্রেরণার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের এক ব্যতিক্রমী মহিলাকে কুর্ণিশ।