এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন ৫৭৫ পার করে ৬০০ দিনের দিকে এগোচ্ছে। এরই মধ্যে মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির নীচে এক সপ্তাহ পার করে অষ্টম দিনে পড়েছে ২০০৯ প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরি প্রার্থীদের অবস্থান। রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের গ্রেফতার নিয়েও মাথা ঘামাতে চান না আন্দোলনকারীরা। তাঁদের একটাই দাবি নিয়োগপত্র। কলকাতার নানা স্থানে আন্দোলন করে এখন গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বসে মুখ্যমন্ত্রীর নজর কাড়তে চাইছেন তাঁরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা থেকে মেয়োরোডে এসেছেন আহমেদুল্লা মোল্লা। তিনি বলেন, 'প্রথমত আমাদের জীবন শেষ হয়ে গেল। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, ১৩ বছর ধরে যে যন্ত্রণায় আমরা ভুগছি তা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক। আমাদের রেজাল্ট প্রকাশ করা হোক।' এদিনই প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য। আহমেদুল্লা মোল্লা বলেন, 'গ্রেফতারের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে এরপর তালিকা বের হবে কিনা তা জানা নেই। আদালত ও মুখ্যমন্ত্রী যদি চান তাহলে আমাদের রেজাল্ট আউট হবে এটুকু আশা রাখি।'
অবস্থানে অংশ নেওয়া বারুইপুরের শেফালী দের স্পষ্ট বক্তব্য, 'আমরা শুধু আমাদের নিয়োগ চাই। আমরা ১৩ বছর ধরে বঞ্চিত। আমরা কোনও কিছুর মধ্যে যেতে চাই না। মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন নিয়োগপত্র দিন।'
আরও পড়ুন- আপাতত শান্ত মোমিনপুর, অস্বস্তিতে স্থানীয়রা, চারদিকে জঞ্জাল, এলাকা যেন সাদা উর্দিধারীদের দুর্গ
ডায়মন্ডহারবারের সুমন সাঁপুই ২০০৯-এ টেট পরীক্ষার আবেদন করেছিলেন। ২০১০-এ পরীক্ষা দিয়েছেন। তিনিও অবস্থানে সামিল হয়েছেন। সুমন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। সুমন সাঁপুই বলেন, 'তখন জেলা ভিত্তিক নিয়োগ পদ্ধতি ছিল। ২০০৯-এ ফরম ফিল-আপ করি। ২০১০-এ পরীক্ষা হয়। ২০১১-তে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ৫টি জেলায় নিয়োগ বাতিল হয়ে যায়, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, মালদা ও পূর্বমেদিনীপুর। ২০১৪-তে এই জেলাগুলিতে ফের পররীক্ষা নেওয়া হয়। আমরা তাতে উত্তীর্ণ হই। হাওড়া ও পূর্ব মেদিনীপুরের নিয়োগ হয় ২০১৫ সালে। বাকি থাকে তিন জেলা। মালদহ ও উত্তর ২৪ পরগনার নিয়োগ হয়ে যায় ২০২১-এর সেপ্টেম্বর মাসে। এখন বাকি শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনা। আমাদের নিয়োগ খুব কাছাকাছি আসছে বলে মনে করছি।' বারুইপুরের বখতিয়ার রহমানের অভিযোগ, 'আমরা কাউকে পয়সা-কড়ি দিইনি। যাঁরা পয়সা-কড়ি দিল তাঁদের চাকরি হয়েছে।'
শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী থেকে একের পর এক আধিকারিক গ্রেফতার হয়েছেন। এদিন মানিক ভট্টাচার্য ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। এসব কচকচানি যা হচ্ছে হোক তবে চাকরিপ্রার্থী অবস্থানকারীদের একটাই দাবি, নিয়োগ।