করোনা কাটিয়ে ছন্দে ফেরার পুজো। আর এবারের পুজোয় পরিবেশ রক্ষার বিশেষ পাঠ দিচ্ছে সল্টলেক ইই ব্লকের পুজো। মণ্ডপ সজ্জায় উঠে আসবে সৌরা শিল্পের অনবদ্য আর্ট ইন্সটলেশন। ২৫ বছরে পা দিতে চলেছে এবারের পুজো। ১৩ ইঞ্চি থেকে আট ফুটের মাটির হাঁড়িতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে অনবদ্য শিল্পকর্ম। সেই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় ব্যবহার করা হচ্ছে ঠোঙা, ইকো-ফ্রেন্ডলি রঙ।
প্রকৃতি রক্ষার বার্তা! এই নিয়েই সল্টলেক ইই ব্লকের এবারের পুজোর বিশেষ থিম ‘আনন্দ ধারা’। খাদ্য সংরক্ষণের সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার বার্তা এবারের মাতৃবন্দনায়। সল্টলেক ইই ব্লকের পুজোয় ধরা দেবে প্রকৃতি প্রেমে ছবি। মণ্ডপ সেজে উঠবে সৌরা শিল্পে। আনন্দ ধারা যেন প্রকৃতিকে রক্ষার বার্তা। সবুজের যত্ন নাও নাহলে বিপন্ন হবে অন্ন সংস্থানও। আর এই বার্তা সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে সল্টলেক ইই ব্লকের পুজো আশ্রয় নিয়েছে ওড়িশার বিখ্যাত সৌরা শিল্পকে।
মণ্ডপ সাজিয়ে তোলা হবে সৌরা আর্ট ইন্সটলেশনে। শিল্পী মানস রায় বলেন, “আমার থিমের নামকরণ আনন্দধারা। যেভাবে প্রকৃতি নষ্ট হচ্ছে তা নিয়ে এক মহার্ঘ্য বার্তা জনমানসে তুলে ধরায় আমাদের লক্ষ্য। এই জন্য আমরা সৌরা জনজাতির আর্ট ইন্সটলেশনের মাধ্যমে সাজিয়ে তুলছি আমাদের মন্ডপ”। সৌরা আর্টের এক অনবদ্য ইন্সটলেশনে ফুটে উঠবে মণ্ডপসজ্জা । গোটা মন্ডপ টাই যেন একটা আর্ট এক্সজিবিশন। দর্শকদের মুগ্ধ করবে এই আর্ট ইন্সটলেশন।
৮ ফুট থেকে ১৩ ইঞ্চির হাঁড়িতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এই আর্ট ইন্সটলেশন। করোনা কাটিয়ে ছন্দে ফিরেছে এবারের পুজো মিলছে ইউনেস্কোর স্বীকৃতিও। তাই এবারের পুজো ঘিরে এক অন্যরকমের আনন্দ জনমানসে। আর সেই আনন্দের মাঝে পরিবেশ রক্ষার বিশেষ পাঠ দেবে সল্টলেক ইই ব্লকের পুজো। পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে বিশেষ ঠোঙাও ব্যবহার করে হচ্ছে মণ্ডপ সজ্জায়। সঙ্গে ব্যবহার করা হছে পরিবেশবান্ধব রঙও।
আরও পড়ুন: < পুজোর শপিং করে ক্লান্ত? রাজ্য সরকারের বিরাট উদ্যোগ, মিলবে এসি বাসে বাড়ি ফেরার সুযোগ! >
ক্লাবকর্তা বলছেন সাজান দাস বলেন , 'আগে একান্নবর্তী পরিবারে রান্না হতো মাটির হাঁড়িতে। সেখানে রান্না হতো ভাত থেকে শুরু করে সব কিছু তৈরি হত। সেটাই সবাই খেত। ওই হাঁড়ির মধ্যে যে খাবার থাকত সেটা আসে প্রকৃতি থেকে। অর্থাৎ হাঁড়ির মধ্যে সুরক্ষিত প্রকৃতি। একদিকে আমাদের যেমন লক্ষ্য প্রকৃতি রক্ষা। আবার অন্যদিক থেকে আমরা এটাও চাই যে বিশ্বের প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে খাবারের সমবন্টন হোক। প্রকৃতির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে খাদ্যের সৃষ্টি। তাই সবার আগে আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। সেই বার্তাই তুলে ধরা হয়েছে এবারে আমাদের এই থিমে। এর জন্য আমরা বেছে নিয়েছি ওড়িশার বিখ্যাত সৌরা শিল্পকে। শিল্পীদের সেই বিখ্যাত শিল্প কলাও মন্ডপ সজ্জায় স্থান পাবে। এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ৮ফুট থেকে ১৩ ইঞ্চির হাঁড়ি। আমাদের আশা এই বছর পুজোয় আমাদের এই মন্ডপ সজ্জা মুগ্ধ করবে দর্শকদের। একটা অন্য বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে এবারের পুজোর মাধ্যেম”।
পাশাপাশি তিনি বলেন, "আমাদের যা সবার আগে প্লাস্টিক বর্জন করা উচিৎ , সেটা সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই বিষয়কে মাথায় রেখে আমাদের দুর্গা পুজোর সূচনা হয়েছে। আমাদের মণ্ডপেও ব্যাবহার করা হবে ঠোঙা। আমাদের মণ্ডপে হাঁড়িটা বিশেষভাবে ব্যবহার তুলে ধরা হচ্ছে। আসলে হাঁড়ি একটা সংসার ধরে রাখে। এখন সেই হাঁড়ি ছোট হয়ে যাচ্ছে। সংসার ছোট হয়ে যাচ্ছে। হাঁড়ি ভালো থাকলে শুধু সংসার নয় সমাজ ভালো থাকে। আর সমাজ থাকলে সবটাই ভালো হয়। সব ধর্মের মানুষ এক হাঁড়িতে খাওয়া দাওয়া করবে এটাও আমাদের ভাবনার অঙ্গ। সেই সব জিনিসকে একটা বড় আর্ট ইনস্টলেশনের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে আমাদের মণ্ডপে"।