প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র ব্যক্তিগত জীবনে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। তবে রাজনীতির বাইরের ভিন্ন জগতে তিনি কখনও থেমে থাকেননি। পরোয়া করেননি কোনও বিতর্ককে। সব বাধাকে নগন্ন করে এগিয়ে গিয়েছেন। এবার তাঁর কাছে অফার এসেছে সিনেমা-সিরিয়ালে অভিনয়ের। বায়োপিক তৈরির পরিকল্পনাও চলছে। তাছাড়া পোষাক-পরিচ্ছদে বাংলার অন্য রাজনীতিকদের থেকে তিনি যে একেবারেই পৃথক সেকথা জানালেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে।
একটা সময় যুব নেতা মদন মিত্র হলুদ পাঞ্জাবিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন। এখনও পাঞ্জাবি তাঁর পছন্দের। তাঁর হেফাজতে কতগুলি পাঞ্জাবি আছে? মদন মিত্র বলেন, 'এক মুহূর্তে বলা মুশকিল। তবে রাসবিহারী থেকে গরিয়াহাট পর্যন্ত যতগুলি দোকান আছে সেগুলিতে মোট যত পাঞ্জাবি আছে তার থেকে বেশি আছে। এতগুলি পাঞ্জাবি কিনেছি তা কিন্তু নয়। সাধারণ মানুষ এগুলি দিয়েছে। দলের কোনও ছেলে পাঞ্জাবি চাইলে দিয়ে দিই। তাই আমার আলমারি কেনার দরকার হয় না।'
পাঞ্জাবি নিয়ে গল্প করতে গিয়ে প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, 'আমি আর অধীর চোধুরী একদিন বিহারে লালুপ্রসাদ যাদবের কাছে গিয়েছিলাম। অধীর চৌধুরী লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে আমার পরিচয় করে দিচ্ছিলেন। তখন লালু বলেছিলেন, একে তো চিনি। চিনবো না কেন? রোজ টিভিতে দেখা যায়। ও একটাই পাঞ্জাবি পড়ে। সবাই জানতো আমার একটাই হলদে পাঞ্জাবি। আসলে হলদে পাঞ্জাবিটাই ছিল কয়েকশো। হলদে ছাড়া আমি পড়তাম না। আসলে আমাকে হাত দেখে বলেছিল আমার রঙ পিত। মানে হলুদ। আপনি পারলে ভিতরের গেঞ্জিও হলুদ পড়বেন। তারপর দখলাম রঙে কিছু হয় না।'
বহু মানুষ আছেন দিন অনুযায়ী পোষাকের রং বদল করেন। একদা মদন মিত্রও তাই করতেন। কামারহাটির বিধায়কের কথায়, 'সোমবার সাদা, মঙ্গলবার লাল এভাবেই পোষাকে রঙ বদলাতাম। এটা দেখে আমার দলের বড় বড় নেতা, দামী-দামী মন্ত্রীরাও এইরকম ভাবে পোষাক পড়তে শুরু করলেন। তাতে কী করল। শনিবার নীল পড়ার কথা শনিবার লাল পড়ে ফেলল। এখন শনি তো নীল দেখে খেপে গেল। এখন আর ওরকম নয়। যেদিন যা খুশি পড়ি। এখন বেশি ধুতি পাঞ্জাবি পড়া শুরু করেছি।' সানগ্লাসের সম্ভারেও রাজ্যের এই প্রাক্তন মন্ত্রী যে কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রীকে হার মানবেন। বিশ্বের সমস্ত ব্রান্ডের সানগ্লাস রয়েছে তাঁর কাছে।
সিনেমা-সিরিয়াল জগতেও অবাধ যাতায়াত রয়েছে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের। অভিনয় করার ইচ্ছেও রয়েছে তাঁর। মদন মিত্র বলেন, 'সিরিয়াল, সিনেমা নিয়ে কথা চলছে। কিছু স্ক্রিপ্ট লেখা হচ্ছে। সিরিয়ালের প্রযোজকরা স্ক্রিপ্ট পাঠিয়েছে। খুবই ইন্টারেস্টিং চরিত্র। এছাড়া একটা বায়োপিক নিয়ে কথা চলছে। বায়োপিকে ২৯ জন নায়িকা অভিনয়ের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। নায়িকা তো দাঁড়িয়ে থাকে না। জলের মতো চলে যায়।'
সোশাল মিডিয়ায় নানা ছবি, তাছাড়া মহিলা-সঙ্গ নিয়ে নানা কাহিনী শোনা যায় এই রঙিন রাজনীতিককে জড়িয়ে। নানা ক্ষেত্রে বিতর্কের জলও বহুদূর গড়িয়েছে। এবিষয়ে কী বলছেন মদন? জবাবে এবার একটু 'ডিফেন্সিভ' ষাটোর্দ্ধ রাজনীতিক। তাঁর কথায়, 'আমার বউ জানে লাটাইটা তাঁর হাতে। যখন চাইবে সুতো গুটিয়ে নেবে। বাড়ির লোক জানে ও যাই করুক বাড়ির কর্তব্য, সংসারের দায়িত্বের প্রতি অবহেলা করে না। তবে হ্যা, ঠিকই যে মহিলাদের সঙ্গে বেশি ছবি দেখা যায়। অনেক সময় অজান্তে আপত্তিকর ছবিও উঠে যায়। অজান্তে উঠলে আমি কী করব?'
সব থেকে মজার বিষয় প্রাক্তন এই মন্ত্রীর ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার কমে গেলে তদন্ত শুরু করে বিশেষজ্ঞ দল। রীতিমতো কাটাছেঁড়া চলতে থাকে। মদন বলেন, 'আমার ইনস্টা ফলোয়ারের ৬৮ শতাংশ মহিলা। তার মধ্যে ৬৪ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ২৫। আমার বিধানসভায় সব থেকে বেশি মহিলা ভোট পেয়েছি।'