Advertisment

বাঘ মেরে পিকনিক, চামড়া পাচারের ছক কষে পুলিশের জালে ৩

সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত বাঘের ছবি দিয়ে পোস্ট। সেই পোস্টের সূত্র ধরেই পুলিশের জালে ৩ যুবক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
3 arrested for leopard hunting in Siliguri

পুলিশের জালে ৩ অভিযুক্ত। ছবি: সন্দীপ সরকার।

চিতাবাঘ শিকার করে তার সঙ্গে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট। চিতাবাঘের মাংস দিয়েই চললো পিকনিক। পিকনিকের পর চিতাবাঘের চামড়া ও পায়ের একাংশ পাচারের চেষ্টা! তবে হল না শে, রক্ষা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তিন যুবককে আটক করল বন দফতর।

Advertisment

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকে। ধৃতদের বয়ান শুনে চক্ষু চড়কগাছ বন দফতরের আধিকারিকদের। এই প্রথম চিতাবাঘের মাংস খাওয়ার ঘটনায় অবাক বনাধিকারিক থেকে পুলিশ প্রত্যেকে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকজন যুবকের সঙ্গে মৃত একটি চিতাবাঘের ছবি ভাইরাল হয়। বিষয়টি নজরে আসতেই নড়চড়ে বসে ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো, সশস্ত্র সীমা বলের গোয়েন্দা বিভাগ ও বন দফতর।

ওই ছবিগুলি হাতে আসা মাত্রই তড়িঘড়ি তদন্ত শুরু হয়। টানা ১৫ দিন তদন্তের পর অবশেষে হদিশ মেলে অভিযুক্তদের। শুক্রবার এসএসবির গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে খবর মেলে ওই চিতাবাঘের ছাল নেপালে পাচারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। খবর পাওয়া মাত্র কার্শিয়াং ফরেস্ট ডিভিশনের ফাঁসিদেওয়া রেঞ্জ, ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো ও এসএসবি যৌথভাবে অভিযানে নামে।

ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ফৌজিজ্যোতে অভিযান চালানো হয়। সেখানকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে ওই ব্লকেরই রায় লাইনের বাসিন্দা মুকেশ কেরকেট্টা ও পিতালুশ কেরকেট্টা নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় চিতাবাঘের চামড়া। কিন্তু চামড়াটি দেখে সন্দেহ হয় আধিকারিকদের। কারণ চামড়া থেকে চিতাবাঘের থাবাগুলি গায়েব ছিল। এরপর ওই দু'জনকে ফের জেরা করা হয়। জেরায় মালবাজারের রানিচেড়া চা বাগানের বাসিন্দা তাপস খুড়া নামে আরেক যুবকের নাম উঠে আসে। তাকেও ঘোষপুকুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন- ‘সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, মা দায়ী নন’, একমাত্র মেয়ের বিয়েতে সচেতনতার পাঠ শিক্ষকের

রেঞ্জ অফিসার সোনম ভুটিয়া বলেন, "মৃত চিতাবাঘের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখা মাত্রই আমরা তদন্ত শুরু করি। এরপর অভিযানে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই প্রথম শুনলাম যে চিতাবাঘের মাংসও তারা খেয়েছে। আর ওই চামড়া পাচারের উদ্দেশ্যে ধৃতরা খোঁজাখুঁজি করছিল। কীভাবে ওই চিতাবাঘটিকে মারা হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।" তবে ঘটনাটি নিয়ে তিনি উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। কারণ মৃত চিতাবাঘের বিষয়ে গ্রামবাসীরা পুলিশ বা বন দফতরকে কোনও খবর দেয়নি। গ্রামবাসীদের আরও সচেতন হতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অতি সম্প্রতিই চিতাবাঘটিকে মারা হয়েছে বা সে মারা গিয়েছে। কারণ তার চামড়ায় কাঁচা মাংস লেগেছিল। থাবাগুলি আলাদা করে বিক্রির ছক ছিল পাচারকারীদের। ১৫৬ মিটার লম্বা ও ৫০ মিটার চওড়া চামড়াটি। তবে বন দফতর কিংবা পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই মাংস রান্না করে খাওয়া হয়েছিল বলে ধারণা আধিকারিকদের। শনিবার ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হবে। তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।

leopard police siliguri Forest Department
Advertisment