এখনও খোঁজ নেই আন্দোলনকারী টেট উত্তীর্ণদের তিন 'সহযোদ্ধার'। অর্ণব ঘোষ, অচিন্ত্য ধাড়া এবং অচিন্ত্য সামন্তের সঙ্গে যোগাযোগই করতে পারছেন না বিক্ষোভকারীরা। তবে এক্ষেত্রে পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। পুলিশই তাঁদের অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছে বলে আশঙ্কা চাকরি প্রার্থীদের।
চাকরির দাবিতে গত সোমবার থেকে একটানা সল্টলেকের করুণাময়ীতে ধর্নায় বসেছিলেন ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরি না মিললে ধর্না উঠবে না, রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে এরপর অনশন আন্দোলনও শুরু করেছিলেন তাঁরা। তবে অবশেষে গতরাতে মাত্র কয়েক মিনিটের পুলিশি হানায় টানা আন্দোলনে আপাতত যবনিকা পড়েছে। আন্দোলনকারীদের টেনে-হিঁচড়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁদের তিন 'সহযোদ্ধা'-র খোঁজ নেই। অর্ণব ঘোষ, অচিন্ত্য ধাড়া এবং অচিন্ত্য সামন্তের সঙ্গে গতকাল রাত থেকে তাঁরা যোগাযোগ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন। চাকরির দাবিতে এই আন্দোলনে সামিল বাঁকুড়ার বাসিন্দা সমীর দণ্ডপাটও। তিনি তাঁদের তিন 'সহযোদ্ধার' এই নিখোঁজের পিছনে পুলিশেরই চক্রান্ত দেখছেন। পুলিশই ওই তিনজনকে আটকে রেখেছে বলে দাবি এই যুবকের।
আরও পড়ুন- ২ মিনিটের ওয়ার্নিংয়েই হাজারখানেক পুলিশ চড়াও, নির্মমতা ভাবলেই গা শিউরে ওঠে
সমীর দণ্ডপাট বলেন, ''অর্ণব ঘোষ, অচিন্ত্য ধাড়া ও অচিন্ত্য সামন্তকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছি না। পুলিশকে আর কী বলব, ওরাই তো করেছে। ওরা আটক করে রেখেছে ওঁদের। ওরা তিনজন আমাদের মেইন অ্যাডমিন। সরকার কিছুক্ষণের জন্য ওঁদের হয়তো আটকে রেখেছে। আজ সন্ধেয় হয়তো ছেড়ে দেবে। এটা আমাদের আন্দোলনকে শেষ করার একটা চক্রান্ত।''
আরও পড়ুন- ফের উত্তপ্ত করুণাময়ী, টেনে-হিঁচড়ে বাম-বিক্ষোভ তুলল পুলিশ, আটক বেশ কয়েকজন
২০১৪-এর টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ তুলতে খোদ পর্ষদ সভাপতি ২০১৭-এর টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভের পরামর্শ দিয়েছেন বলে দাবি এই যুবকের। তাঁর কথায়, ''প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিই ২০১৭ টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভ করতে বলেছিলেন। ওঁদের পুলিশ প্রোটেকশন দেওয়া হয়েছিল। ২০১৪-এর আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। আমাদের কাছে এর প্রমাণও আছে।''
আন্দোলন করতে গিয়ে তিনজনের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন বাকিরাও। ২০১৪ প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড একতা মঞ্চের চাকরিপ্রার্থী মৌমিতা ঘোষ। গতরাতে তিনিও করুণাময়ীতে ছিলেন। তিনি বলেন, ''আমাদের প্রসিডেন্ট অচিন্ত্য ধাড়ার সঙ্গে গতকাল রাত দেড়টা নাগাদ আমার সঙ্গে ওঁর কথা হয়েছে। ওঁকে বিধাননগর উত্তর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিধাননগর উত্তর থানা থেকে ওঁকে আর পাওয়া যায়নি। অচিন্ত্য সামন্ত নামে আমাদের আরও এক প্রতিনিধিকে বিধাননগর পূর্ব থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে ওখান থেকে হাওয়া করে দেওয়া হয়। অর্ণব ঘোষকে কেউ দেখতেই পায়নি। রাতের অন্ধকারে ওঁকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনশনমঞ্চ থেকে ওঁকে চারজন তুলে নিয়ে যায়। অর্ণবদাকে রাতে ফোন করেছিলাম, উনি ফোন তোলেননি।''