দুপুরে দুঃসাহসিক ডাকাতি, রাতেই পাকড়াও দুষ্কৃতীরা। উদ্ধার ডাকাতির গয়নাও। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা হুগলির ডানকুনির। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডানকুনির একটি নামী অলংকার বিপণির শোরুমে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী। বন্দুক উঁচিয়ে টাকা-গয়না লুঠ করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ঘটনার পরপরই কোমর বেঁধে তদন্তে নামে ডানকুনি থানা-সহ চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। সতর্ক করে দেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী হুগলি গ্রামীণ পুলিশ এবং হাওড়া সিটি পুলিশকেও। শেষমেশ রাতেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে দুষ্কৃতীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাকাতির ঘটনার পরেই ডানকুনির চারিদিকে নাকা চেকিং শুরু করে দেয় পুলিশ। তার আগে ঘটনাস্থলের আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে দুস্কৃতীরা সংখ্যায় ৫ জন ছিল। তিনটি বাইকে চেপে ডাকাতির পর চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। সন্ধে নাগাদ ভদ্রেশ্বরের নসিবপুর কানেক্টরের কাছে একটি বাইক উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বাইকটি ডানকুনির ডাকাতদলের বলেই নিশ্চিত হয় পুলিশ।
রাতের দিকে আসে আরও একটি ব্রেক থ্রু। রাতে হুগলি-বাঁকুড়ার সীমান্তবর্তী থানা গোঘাটের খাটুল বাজারের বাসস্ট্যান্ডে বেশ কয়েকটি ব্যাগ নিয়ে জনা চারেক হিন্দিভাষী ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন স্থানীয়রা। জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি ধরা পড়তেই তিনজনকে ধরে ফেলেন তাঁরা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে আগেই সরে পড়ে এক দুষ্কৃতী।
আরও পড়ুন- ‘কোনও দিশা নেই, ঢপবাজি চলছে’, মমতার চা-ঘুগনির ব্যবসা পরামর্শে ধুয়ে দিলেন দিলীপ
স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা এরপর তিন দুষ্কৃতীকে ধরে থানায় খবর দেয়। গোঘাট থানা ও বাঁকুড়ার কোতুলপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের ব্যাগ সার্চ করতেই বেরিয়ে আসে রাশি রাশি অলংকার। ৪টি পাইপগানও উদ্ধার হয়।
ডানকুনির ডাকাতির মালই উদ্ধার হয়েছে বলে প্রায় নিশ্চিত হয় পুলিশ। গোঘাট থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ধৃতদের কাছ থেকে প্রায় ২০ কেজি সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। রাতেই ডানকুনি থানার পুলিশের হাতে ধৃতদের তুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- ফের অনুব্রতর বাড়িতে CBI, পাহাড়-প্রমাণ সম্পত্তি নিয়ে কেষ্ট-কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ
চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের দাবি, জেরায় ধৃতরা ডানকুনির ডাকাতিতে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সূত্রের খবর দুষ্কৃতীদের এই দলের সবাই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তবে এদের সঙ্গে স্থানীয় দুস্কৃতীদেরও যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের। ডানকুনিতে ডাকাতির পর বাঁকুড়ার বাসে উঠে পুরুলিয়া হয়ে তাদের ঝাড়খণ্ডে পালানোর ছক ছিল বলে অনুমান পুলিশের।