রাজভবনে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রাজ্যের মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন চার তৃণমূল বিধায়ক। রাজ্য মন্ত্রিসভার নয়া সদস্য হিসাবে সুজিত বসু, তাপস রায়, ডাঃ নির্মল মাজি এবং রত্না ঘোষের নাম বুধবারই চূড়ান্ত হয়েছিল। এদিন, প্রথা অনুযায়ী শপথ গ্রহণ করলেন তাঁরা।
কে, কোন দফতর পেলেন?
বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুকে দেওয়া হয়েছে দমকল মন্ত্রকের ভার।
তাপস রায় পেলেন পরিকল্পনা রূপায়ন দফতরের পূর্ণ দায়িত্ব। এর পাশাপাশি, পরিষদীয় মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলাতে হবে বরানগরের বিধায়ককে। উল্লেখ্য, বর্তমানে রাজ্যের পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক এবং তৃণমূলের চিকিৎসক ইউনিয়নের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ডাঃ নির্মল মাজিকে শ্রম দফতরের দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষকে মাঝারি, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শোভন চট্টোপাধ্যায় পদত্যাগ করার পর, দমকল ও আবাসন দফতর মন্ত্রীহীন হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে এই দুটি দফতরগুলি ভাগ করে দেওয়া হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতিআস্থাভাজন ববি হাকিম এবং অরূপ বিশ্বাসের মধ্যে। ববি পান দমকল এবং অরূপের দায়িত্বে থাকে আবাসন দফতর। কিন্তু, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী থাকার পাশাপাশি বর্তমানে কলকাতার মহানাগরিকের গুরু দায়িত্বও পেয়েছেন ববি। ফলে তাঁর কাঁধ থেকে ‘অতিরিক্ত’ দায়িত্ব লাঘব করতেই হত বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর একদা অতি ঘনিষ্ঠ সুজিত বসু দীর্ঘ কাল আগে সিপিআই-এম ছেড়ে ঘাঁসফুল পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। এরপর থেকে দলের হয়ে ‘নিরলস’ কাজও করে চলেছেন বিধাননগরের বিধায়ক। কিন্তু, এর আগে বহুবার তাঁর মন্ত্রীত্বের সম্ভবনা তৈরি হলেও, শেষ পর্যন্ত আটকে গিয়েছে। তবে এবার তিনি ‘পদ পেলেন’। অন্যদিকে, বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ দিনের সঙ্গী তাপস রায়। মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই তাঁকে ভরসা করেন বলে শোনা যায় দলের অন্দরে। বরানগরের বিধায়ক এবার সেই ‘ভরসার দাম পেলেন’ বলে মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। এর পাশাপাশি, দলের চিকিৎসক সংগঠনে রীতিমতো হাঁকডাক রয়েছে নির্মল মাজির। সব দিক থেকে এই নেতার গুরুত্ব মূল্যায়ন করে তাঁকেও এবার মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হল বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া, সামনেই লোকসভা ভোট, ফলে জেলা রাজনীতির সমীকরণ ভাবতে হচ্ছে রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূলকে। আর সে জন্যই চাকদহের বিধায়িকাকেও মন্ত্রী করা হয়েছে। এমনটাই পর্যবেক্ষণ রাজনীতির কারবারিদের।