রাজ্যে রেশন বন্টন এবং ধান কেনার দুর্নীতি কাণ্ডে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে টাকার অঙ্ক। মোট কত টাকার দুর্নীতি হয়েছে, তদন্তের শেষে কোথায় গিয়ে থামবে তা এখনই অনুমান করতে পারছে না এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সূত্রের খবর, শুধু বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানের এনপিজি রাইস মিল প্রাইভেট লিমিটেড এবং ফ্লাওয়ার মিলের মাধ্যমেই দুর্নীতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার। দিল্লির সদর দফতরে এমনটাই রিপোর্ট পাঠিয়েছে ইডি।
খাদ্য দুর্নীতির তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। এর আগে, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে ধান কেনার নামে সরকারের কাছ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বাকিবুরের মিল। জানা গিয়েছে, তদন্তে উঠে এসেছে এই ধান কেনাবেচার বাইরে রেশন বণ্টনে আরও ৫৫০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে বাকিবুর। বরাদ্দ খাদ্যশস্য ২৫ শতাংশ ওজনে কম দিয়ে এবং খারাপ মানের খাদ্যশস্য দিয়ে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
ইডির রিপোর্ট উল্লেখ, গত ১০ বছরে দুর্নীতি করে শুধু বাকিবুর রহমানের একা আত্মসাৎ করা অঙ্ক হাজার কোটি টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। বাকিবুর ছাড়াও আরও রাইস মিল মালিক এই দুর্নীতিতে যুক্ত। জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার বেশ কয়েকটি রাইস মিলের খোঁজখবর নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। কোন কোন মালিক জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ সেই খবরও নিচ্ছে ইডি। সামগ্রিকভাবে দুর্নীতির অঙ্ক যে আকাশ ছুঁতে চলেছে তা নিয়ে নিঃসন্দেহ তদন্তকারীরা। সমস্ত দুর্নীতির মূল লভ্যাংশ কেবল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পেয়েছে, না আরও কোনও প্রভাবশালী লাভবান হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা।
খাদ্য দুর্নীতি মামলায় প্রথমে বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নাম উঠে আসে রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে ইডি। এখনও এই দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তথা বালু। এখনও তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য। এখন দেখার বিষয়, খাদ্য দুর্নীতি মামলায় টাকার অঙ্ক কোথায় গিয়ে পৌঁছয়। পাশাপাশি, এই দুর্নীতিতে আরও কারা জড়িত, সেদিকেই নজর রাজ্যবাসীর।
আরও পড়ুন- ‘চিকিৎসা জাদুঘর’, যুগান্তকারী সৃষ্টির অভাবনীয় নজির গড়ার পথে বিলেত ফেরত প্রবীণ চিকিৎসক