Advertisment

Trinamool goons brutality: সালিশি সভায় হাজির না হওয়ায় ব্যাপক মারধোর, খুনের হুমকি! ছেলেকে নিয়ে ঘরছাড়া দম্পতি

A family in Burdwan is homeless: ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় নির্যাতিত দম্পতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে।

IE Bangla Web Desk এবং Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Tortured family, TMC Leader, নির্যাতিত পরিবার, তৃণমূল নেতা

Tortured family-TMC Leader: বামদিকে নির্যাতিত পরিবার। ডানদিকে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ আজাদ রহমান। (নিজস্ব চিত্র)

A family in Burdwan is homeless due to Trinamool goons brutality: সালিশি সভায় হাজির না হওয়ায় ব্যাপক মারধোর ও খুনের হুমকি। প্রাণ বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত ঘরবাড়ি ছাড়ল এক দম্পতি ও তাদের ছেলে। আদালতে বিচারাধীন মামলার বিচারের জন্য ডাকা হয়েছিল এই সালিশি সভা! সেই সভায় হাজির না হওয়ার চরম মাশুল এখন গুনতে হচ্ছে ওই দম্পতি ও তাদের ছেলেকে। তাঁদের ব্যাপক মারধর করার পাশাপাশি খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার সাগরেদদের বিরুদ্ধে। সেই হুমকি শোনার পরেই প্রাণ বাঁচাতে ওই দম্পতি ও তাদের ছেলে বাধ্য হয়েছেন নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালাতে।

Advertisment

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার কুবাজপুর গ্রামের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। প্রতিবাদে স্বোচ্চার হয়েছেন বিরোধীরা। তারই মধ্যে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় আক্রান্ত দম্পতি দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। ছেলেটির মা তাঁদের ওপর হওয়া হামলা ও আক্রমণের সবিস্তার বিবরণ লিখিতভাবে রাজ্য পুলিশের ডিজি, জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে জানিয়েছেন। প্রশাসন এবার ন্যায্য বিচার করবে। সেই আশাতেই এখন অসহায় ওই পরিবার। জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, 'অভিযোগের তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

জামালপুর ব্লকের চকদিঘf পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম কুবাজপুর। এই গ্রামেই বাড়ি কৃষিজীবী পরিবারের দম্পতি শেখ বোরহান আলি ও সাহানারা বিবি। তাঁদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন তাঁদের ছেলে শেখ বসির আলি। সাহানারা বিবি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, '২০১৮ সালে আমার ছেলে বসির আলির সঙ্গে বর্ধমান থানা এলাকা নিবাসী এক তরুণীর বিয়ে হয়। কিন্তু ছেলের বিবাহিত জীবন সুখের হয়নি। বৌমা তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যায়। পরে বৌমা বধূ নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করে। ওই মামলায় বর্ধমান সিজেএম আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে। এরপর বৌমা খোরপোষের মামলা করে। সেই মামলা এখন বর্ধমান আদালতের বিচারাধীন।'

সাহানারা বিবির অভিযোগ, 'আদালতে বিচারাধীন ওই মামলার বিচার এখন আদালতকে টপকে করতে চাইছেন আমাদের এলাকার তৃণমূল নেতা। সেই কথা জানাতে, গত ১৩ জুন আমাদের বাড়িতে আসেন চকদিঘি অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আজাদ রহমানের সাগরেদরা। তাঁরা জানিয়ে যায়, আমাদের বৌমার করা মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আজাদ রহমান চকদিঘি অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস অফিসে বিচারসভা ডেকেছেন। ১৪ জুন, সেই বিচার সভায় আমাদের পরিবারের সবাইকে হাজির থাকতে হবে। আজাদ রহমানের সাগরেদরা ওই দিন এ-ও জানিয়ে যায়, আমরা যদি আজাদ রহমানের বিচার সভায় হাজির না হই, তাহলে তারা আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে, বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে। এমনকী আমাদের প্রাণে মেরে দেওয়া হবে বলেও তারা হুমকি দিয়ে যায়।'

এই হুমকি পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় সাহানারা বিবির ছেলে শেখ বসির আলি জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানান। সাহানারা বিবির কথা অনুযায়ী, 'জীবনহানির শঙ্কায় আমরা কেউ ১৪ জুন চকদিঘির তৃণমূল পার্টি অফিসে আজাদ রহমানের বিচারসভায় যাইনি। তার কারণে ওই দিন রাতেই লাঠি-সোটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে চড়াও হয় আজাদ রহমানের ১২ জন সাগরেদ-সহ আরও অনেকে। তারা বলতে থাকে, আমরা শাসকের শাসন করতে এসেছি। এইটুকু কথা বলেই তাঁরা ছেলে বসির আলিকে ব্যাপক মারধর শুরু করে দেয়। তারা বসিরকে প্রাণে মেরে দিতে বসিরের গলায় পা তুলে দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। এমনটা দেখে আমি ও আমার স্বামী বসিরকে বাঁচাতে যাই। তখন আমাদের ওপরেও হামলা শুরু হয়। আজাদ রহমানের সাগরেদরা আমার শ্লীলতাহানি করা শুরু করলে আমি ও আমার স্বামী চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করি।'

আরও পড়ুন- বাড়িতে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান, মুকুল রায়কে ভর্তি করানো হল হাসপাতালে, এখন কেমন আছেন?

সাহানারা বিবির করা অভিযোগ অনুযায়ী, 'আমাদের চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে স্থানীয় এক সহৃদয় ব্যক্তি জামালপুর থানায় ফোন করে দেন। সেই ফোন পেয়ে পুলিশ বাড়িতে পৌঁছয়। পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে জামালপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করে চিকিৎসকরা মারধরে জখম বসিরকে বর্ধমান হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বসির ওই দিনের হামলা আর মারধরের ঘটনার কথা জামালপুর থানায় গিয়ে সবিস্তার জানায়। কিন্তু, কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় আজাদের ওই সাগরেদরা আজও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই অবস্থায় প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে ঘর বাড়ি, ফসল ফলে থাকা চাষের জমি, গবাদি পশু- সব ফেলে রেখে আমাদের বাড়িছাড়া হতে হয়েছে। প্রশাসন নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করলে আমাদের আর বাড়ি ফেরা হবে না।'

এদিকে বৃদ্ধার আনা অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় পড়তেই চকদিঘী অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি শেখ আজাদ রহমান সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “বসির আলির পরিবারকে আমি চিনি। তাদের যে মামলার বিচার আদালতে চলছে তার বিচারের জন্য আমি কোনও বিচারসভা বা সালিশি সভা ডাকিনি। তবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি বসিরের পরিবারের সাথে যে ঘটনা ঘটছে সেটা গ্রাম্য বিবাদৃজনিত ঘটনা। মিথ্যা করে ওই ঘটনার সঙ্গে আমার নাম জড়ানো হয়েছে।" জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এমন ঘটনার ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। আমি খোঁজখবর নেব। আভিযোগ সত্য হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

police burdwan Mamata Government Hospitalized Homeless man Youth
Advertisment