Offbeat Destination: প্রতিদিনের জীবনের তুমুল ব্যস্ততা থেকে দিন কয়েকের ছুটি নিন। কাটিয়ে আসুন প্রকৃতির কোল থেকে। পাহাড়ি এই গ্রামের হৃদয় জুড়নো পরিবেশ এক লহমায় ভুলিয়ে দেবে যাবতীয় স্ট্রেস। ফিরে গিয়ে একেবারে সতেজ মনে যোগ দিতে পারবেন কাজে। অল্প কয়েকদিনের এই বেড়ানোর পর্ব বহুদিন পর্যন্ত আপনার স্মৃতির পাতায় উজ্বল হরফে লেখা থাকবে, একথা হলফ করে বলেছেন এতল্লাটে বেড়িয়ে যাওয়া অনেকেই। এই প্রতিবেদনে বাংলারই এক শান্ত-নিরিবিলি পাহাড়ি গ্রামের হদিশ মিলবে। যেখানে একবার গেলে, ফিরতে মনই চাইবে না।
উত্তরবঙ্গের আনাচে-কানাচে অফবিট এমন অনেক জায়গা আছে যেখানকার অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক শোভা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। প্রকৃতি যেন নিজে হাতে ঢেলে সাজিয়েছে পাহাড় কোলের ছোট্ট গ্রামগুলিকে। উত্তরবঙ্গের এই এলাকাটিও তাদেরই একটি। কোলাহলমুক্ত এই পাহাড়ি গ্রামে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবারের বাস। এঁদের ব্যবহার-আতিথেয়তা আপনাকে মুগ্ধ করবে। সাজানো-গোছানো পরিপাটি পাহাড়ি গ্রাম রামধুরা। কালিম্পঙের বারমিয়াক ডিভিশনের ছোট্ট-শান্ত-কোলহালহীন গ্রামের প্রাকৃতিক শোভা এককথায় অনবদ্য।
আরও পড়ুন- হৃদয় জুড়নো পরিবেশ! পাহাড় কোলের এগ্রামেই প্রাণের সুখ, মনের আরাম
ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫,৮০০ ফুট উচ্চতার এই ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামে বছরভর মনোরম আবহাওয়া থাকে। শ্রীরামচন্দ্রের নামানুসারে গাঁয়ের নাম। 'ধুরা' শব্দের অর্থ হল গ্রাম। এই গ্রামে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত দারুণ উপভোগযোগ্য। হিমালয়ের কোলের এই গ্রামে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাইন গাছ। পাহাড় ঢালের গ্রামের নীচের দিকটায় তাকালেই দেখা মিলবে সুন্দরী তিস্তা নদীর। গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে আমলকী, হরিতকী, চিরতার গাছ দেখতে পাবেন। এখানকার বিস্তৃত জমিতে সিঙ্কোনা চাষ হয়।
আরও পড়ুন- ভুলে যাবেন দীঘা-পুরী! বাংলার এই সাগরতটের অপূর্ব শোভা লজ্জায় ফেলবে অতীব সুন্দরী রমণীকেও
রঙবেরঙের নাম না জানা পাহাড়ি ফুল ঢেকে রেখেছে গোটা গ্রামকে। অ্যাডভেঞ্চার যাঁরা ভালোবাসেন এখান থেকে বেড়িয়ে পড়তে পারেন ট্রেকিংয়ে। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে পৌঁছে যাবেন ইচ্ছেগাঁও-সিলারিগাঁওয়ে। ছবির মতো সাজানো পাহাড়ি গ্রামগুলো যেন এক সুতোয় বাধা। যাঁরা ট্রেকিংয়ে যেতে চান না তাঁরা এখানাকার সৃদৃশ্য হোম স্টেগুলির বারান্দায় বসেই তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে পারেন প্রকৃতির শোভা। এখানে রয়েছে ব্রিটিশ আমলে তৈরি জলসা বাংলো। কাঠের তৈরি এই বাংলোর পরতে-পরতে লুকিয়ে ইতিহাস। স্থানীয়দের কাছ থেকেই বাংলো নিয়ে নানা কাহিনী শুনতে পাবেন।
কীভাবে যাবেন রামধুরায়?
হাওড়া কিংবা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি বা এনজেপি স্টেশনে পৌঁছে যেতে হবে। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে আপনাকে পৌঁছতে হবে কালিম্পঙে। কালিম্পং শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের ওপরে রয়েছে এই রামধুরা গ্রাম। এনজেপি বা নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সরাসরি গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন এই গ্রামে। এছাড়া যে কোনও গাড়িতে বা বাসে কালিম্পঙে পৌঁছে গিয়ে সেখানে থেকেও গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন এতল্লাটে।
আরও পড়ুন- বাংলার এপ্রান্তের পরতে-পরতে লুকিয়ে ইতিহাস, রহস্যে ঘেরা নানা কাহিনী আজও চর্চায়!
রামধুরায় থাকবেন কোথায়?
এখানে বেশ কয়েকটি হোম স্টে রয়েছে। থাকা-খাওয়া ধরে এখানে খরচ নেওয়া হয়। স্থানীয়রাই হোম স্টেগুলি চালান। আগে থেকে বুকিং করে যাওয়াই ভালো। যোগাযোগ করতে পারেন খলিং হোম স্টে- ০৭৯৪২৬৭৬১৮৮। এছাড়াও রয়েছে হিল হোম স্টে, হেভেন ভ্যালি হোম স্টে।