২০২০ সালে করোনার জন্য লকডাউনে সুন্দরবনের ঘোড়ামারা দ্বীপের বাসিন্দা ১৪ বছরের শেখ সেলিম শিক্ষার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ২০২১ সালে ইয়াস ঘূর্ণিঝড় দাপটে তার ফের স্কুলে যোগদানের আশা নষ্ট হয়ে যায়। দুটো ঘটনাই তার পরিবারকে বারবার আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। বাধ্য হয়ে সেলিম ও তার বাবা-মাকে কাজের জন্য কেরালায় চলে যেতে হয়।
ত্রিশুরে, কাজের জন্য প্রতিদিন ৮০০ টাকা করে বেতন পেত সেলিম। স্কুল থেকে ড্রপ আউট হওয়ার দুই বছর পর, সে গ্রামে ফিরে এসেছে, অস্থায়ী ক্লাসরুমে বসতে পেরে সেলিম এখন রীতিমতো আনন্দিত। কারণ, সে আগের মত লেখাপড়া করতে পারছে।
তবে সেলিম একা না। তার মত স্কুল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আরও বহু পড়ুয়া এই স্কুলে লেখাপড়া করছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত এই অস্থায়ী স্কুলের ব্যবস্থা করেছে। যা ইতিমধ্যেই পরিচিত হয়ে উঠেছে 'পঞ্চায়েতের পাঠশালা' নামে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্কুলগুলো ফের খোলার নির্দেশ দেওয়ার কয়েক মাস পরে ঘোড়ামারা গ্রাম পঞ্চায়েত গত মাসে এই পঞ্চায়েতের পাঠশালা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন- ২০০ কোটির জালিয়াতি! ED’র চার্জশিটে এবার ‘অভিযুক্ত’ জ্যাকলিন
এই, স্কুল ফিরে আসার মধ্যেও একটি সমস্যা রয়েছে। ফিরে আসা ছাত্ররা যতদূর লেখাপড়া করেছিল, সেই সব পুরোনো পড়াগুলোরও অনেককিছু এখন মনে করতে পারছে না। সেলিমের বাবা এখন বই বাঁধাই করার কাজ করেন। স্কুলে ফিরে আসার ব্যাপারে সেলিম বলছিল, 'আমরা এই বছরের শুরুতে স্কুলে ফিরে এসেছি। আমার বাবা আমাকে আবার স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু, আমি ক্লাসে অস্বস্তি বোধ করতাম। কারণ, আমি এতদিন পড়াশোনা থেকে দূরে ছিলাম। যদিও আমি স্কুলে ফিরে এসেছি, ফের চেষ্টা করেছি। কিন্তু, কিছুদিন স্কুলে যাতায়াতের ব্যাপারে অনিয়মিত ছিলাম। কী শেখানো হচ্ছে, বুঝতে পারছি না। তারপর একদিন পঞ্চায়েতের থেকে লাউডস্পিকারে ঘোষণা করা হল যে তারা একটি পাঠশালা খুলছে। যেখানে বিনামূল্যে শিক্ষা দেওয়া হবে। আমি সেখানেই ভর্তি হয়েছি।' এই পাঠশালা শুধুমাত্র যে বিনামূল্যে পড়ায়, তা-ই না। বাল্যবিবাহ এবং শিশুশ্রমের মতো বিষয়েও সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে।
Read full story in English