New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2024/06/Marriage.jpg)
marriage at crematorium: শ্মশানে বিয়ে!
স্বাভাবিকভাবেই এমন বিয়ের খবর দ্রুত লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। গোটা এলাকায় এই বিয়ে নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। কেন এমন বিয়ে? হঠাৎ ছাদনাতলা ছেড়ে কেন শ্মশানে বিয়ে করলেন এই তরুণ-তরুণী? পুরো ঘটনা জানলে তাজ্জব না হয়ে পারবেন না!
marriage at crematorium: শ্মশানে বিয়ে!
এ এক আজব বিয়ে! ছাদনাতলার বদলে বর ও কনের চারহাত এক হল শ্মশানে। সেখানেই হল মালা বদল। তবে এমন বিয়ের পেছনেও রয়েছে নিদারুন এক বেদনাতুর কাহিনী। সদ্য মাতৃহারা মেয়ে পল্লবী মুখোপাধ্যায় তাঁর মায়ের ইচ্ছাপূরণ করেছেন। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার রটন্তীকালী মন্দির সংলগ্ন শ্মশানে মায়ের মৃতদেহের সামনেই প্রেমিকের গলায় মালা পরিয়েছেন তিনি।
মালাবদল পর্ব শেষ হতেই প্রেমিকার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন প্রেমিক জয়দীপ অধিকারী। গভীর শোক বুকে নিয়ে শুধুমাত্র মায়ের ইচ্ছাপূরণে এক মেয়ের এভাবে বিয়ে হওয়ায় দৃশ্য অনেকেই মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করে রাখেন। পরে সামাজিক মাধ্যমে সেই ছবি ভাইরাল হয়।
এমন বিয়ে নিয়ে গুসকরায় গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়েছে। তরুণী পল্লবীর বাড়ি গুসকরা শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লিতে। পল্লবীর বাবা ভবানী মুখোপাধ্যায় পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর ওষুধের দোকান রয়েছে। মা নিলীমাদেবী ও বাবা ভবানীবাবুর একমাত্র সন্তান পল্লবী। স্নাতক উত্তীর্ণ পল্লবী কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। তাই তাঁকে কলকাতাতেই থাকতে হতো। ভাতারের বেরোয়া গ্রাম নিবাসী জয়দীপের সঙ্গে কয়েক বছর আগে থেকেই পল্লবীর ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনের পরিবারই বিষয়টি জানতো। পল্লবী ও জয়দীপ বিয়ে করবেন বলেও ঠিক ছিল। তবে পল্লবী বিয়ে নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চাইছিলেন না। তবে নিলীমাদেবী চাইতেন তাঁর মেয়ে তাড়াতাড়ি বিয়ে করে নিক।
আরও পড়ুন- Job Scam: চাকরি দুর্নীতি: এবার ডাকাবুকো TMC বিধায়ককে CBI তলব
পরিবার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বুধবার পল্লবীর মা নিলীমাদেবী বাড়িতে একাই ছিলেন। সেই বাড়িতেই নিলীমাদেবী আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁর স্বামী ভবানী মুখোপাধ্যায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে মৃত অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেন। গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। ময়নাতদন্ত করে দেহ ফিরলে ওই দিন রাতে নিলীমাদেবীর দেহ গুসকরা শহরে রটন্তীকালী শ্মশানে দাহ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
নিলীমাদেবী চেয়েছিলেন তাঁর একমাত্র মেয়ের বিয়ে দ্রুত হয়ে যাক। এই ইচ্ছা হামেশাই প্রকাশ করতেন তিনি। তাই মায়ের সেই ইচ্ছা পূরণ না করে মায়ের দেহ সৎকার করার বিষয়টি পল্লবী মন থেকে মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই বুধবার রাতে শ্মশানে মায়ের দেহ সৎকার করার আগে মেয়ে পল্লবী তাঁর মায়ের মৃতদেহের সামনেই প্রেমিক জয়দীপের গলায় মালা পড়িয়ে দেন।
জয়দীপ তাঁর প্রেমিকার সিঁথিতে পরিয়ে দেন সিঁদুর। জয়দীপের বাবা মলয়বাবু বলেন, “বিয়েটা অন্যরকম ভাবে হল বলে অনেকে অবাক হচ্ছেন। তবে মায়ের ইচ্ছা পূরণের জন্যে মেয়ে পল্লবী যে দৃষ্টান্ত তৈরি করল তা মায়ের প্রতি সন্তানের ভক্তিরই প্রকাশ। এটা নিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ।" কিছুদিন পর ছেলের বিয়ে উপলক্ষ্যে একটা অনুষ্ঠান কববেন বলে মলয়বাবু জানিয়েছেন।