সম্প্রতি কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনে ২০৮টি আসনে লড়াই করে ০.৫৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে আম আদমি পার্টি। সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে মূল লড়াই হয়েছে কংগ্রেসের। গেরুয়া শিবির ধরাশায়ী হয়েছে। কিন্তু এরাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে সার্বিক লড়াইয়ের স্বার্থে আম আদমি পার্টি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করবে না বলে ঘোষণা করেছে। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি ২৩ মে নবান্নে মমতা-কেজরিওয়ালের বৈঠকের পরই এই সিদ্ধান্ত? যদিও আপের রাজ্য মুখপাত্র অর্ণব মৈত্রর দাবি, 'আমাদের এখন প্রধান লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে। সংবিধান রক্ষার লড়াই।'
পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই করে এখানে সংগঠন মজবুত করার কথা ঘোষণা করেছিল আপ নেতৃত্ব। গ্রামীণ ক্ষেত্রে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে রাস্তায় নেমেছিল কেজরিওয়ালের দল। শুক্রবার অর্ণব মৈত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'আম আদমি পার্টি ২০২৩-এ রাজ্য়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ছে না। এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য বিজেপিকে আটকানো। যেভাবে বিজেপি সংবিধানকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আমাদের প্রধান লড়াই হচ্ছে বিজেপির বিরুদ্ধে। দেশে যদি সংবিধানই না থাকে তাহলে আমরা এগোতে পারব না। যে দল যেখানে শক্তিশালী সেই দল সেখানে লড়াই করে বিজেপিকে হারাবে। এটাই এখন চাইছে আপ। নবি মুম্বাই কর্পোরেশনে আপের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েও তুলে নিয়েছে।'
সম্প্রতি কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে মোদি-শাহর বিজেপিকে নাস্তানাবুদ করে রাহুল গান্ধির কংগ্রেস। সেখানে আপ ২০৮টি আসনে পার্থী দিয়েও হালে পানি পায়নি। এর আগে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনেও আপ প্রার্থী দিয়েছিল। হাত শিবিরের অভিযোগ, আপ ভোট কেটে বিজেপিকে সাহায্য করছে। তাহলে কর্নাটকে কেন গেল আপ? অর্ণবের জবাব, 'কর্নাটকে পরিস্থিতি অন্য়রকম ছিল। ওখানে সেন্ট্রাল কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল লড়াই করার জন্য। লড়াই করেছে। যা ভোট পেয়েছি তাতে আমরা খুশি। আম আদমি পার্টিকে যেখানে মানুষ চাইবে সেখানে লড়াই করবে। কিন্তু এই মুহূর্তে বিশেষ সময় চলছে দেশে। এই সময় সংবিধানকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে মোদি সরকার।'
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত ভোট ২০২৩: হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে যেন প্রথম বলেই ছক্কা বিরোধীদের!
এখানে জোটও করছে না বা কোনও দলকে আপ সমর্থন করছে না বলেও দাবি করেছে দলের রাজ্য মুখপাত্র। তাহলে কি তৃণমূলকে সমর্থন করছে আপ? অর্ণবের বক্তব্য, 'পঞ্চায়েত ভোটে আমরা কাউকে সমর্থন করছি না। শুধু বলছি বিজেপির বিরুদ্ধে দেশবাসীকে একত্রিত হতে হবে। কোনও জোট নেই। পঞ্চায়েতে লড়াই না করলেও এরাজ্যে দুর্নীতি আছে তাও কিন্তু মানছে আপ।'
আরও পড়ুন- মনোনয়ন ঘিরে ধুন্ধুমার, বিজেপি বিধায়ককে তাড়া, ‘চোর’ ‘চোর’ চিৎকার
একদিকে আবগারি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় এজেন্সির আপের শীর্ষ নেতা ও দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেফতার। অন্যদিকে আমলা বদলি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তীব্র বিরোধ। রাজ্যসভায় বিজেপির নয়া বিলের বিরোধিতা। ২৩ মে নবান্নে এসে দেখা করে গিয়েছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মমতার সমর্থন পেতেই বৈঠক করেছিলেন কেজরিওয়াল। তৃণমূল নেত্রী রাজ্যসভার বিল পাশে আপের সঙ্গে থেকে বিজেপির বিরোধিতা করবে বলেও জানিয়ে ছিলেন। তারপর এই রাজ্যে আপের পঞ্চায়েতে লড়াই না করার ঘোষণা সিদ্ধান্তে নানা প্রশ্ন উঁকি মারছে রাজনৈতিক মহলে।