Shantiniketan: শান্তিনিকেতনে বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এবং বিশিষ্ট লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলা ঘিরে সমালোচনার ঝড় বয়েছে। ঐতিহ্যমণ্ডিত বাড়িটি ভাঙা নিয়ে এবার সমালোচনায় সরব কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা BJP রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
এর আগেও একবার বোলপুর পুরসভার নির্দেশ অগ্রাহ্য করে এই বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে পুরসভা বাড়ি ভাঙায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে ঐতিহ্যমণ্ডিত সেই বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ ফের শুরু হয় বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনের এই বাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সোনালী সব ইতিহাস, শিল্পচর্চার দীর্ঘ এক পরম্পরা। জানা যায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইপো এবং বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় আচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে অলকেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে এই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। ছেলের তৈরি বাড়িতে বহু সময় থেকেছেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেও। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিতেই এই বাড়িটির নাম রাখা হয় 'অবনপল্লী'।
শান্তিনিকেতনে বাড়ি ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বহু অধ্যাপক, আশ্রমিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা যারপরনাই ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। শান্তিনিকেতনে এই ঐতিহ্যমণ্ডিত বাড়ি ভাঙা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
আরও পড়ুন- SSC Recruitment: SSC-র নয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও 'জোরালো জট', হাইকোর্টে মামলা দায়ের
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, "শান্তিনিকেতনে বিশ্ববরেণ্য চিত্র শিল্পী এবং বিশিষ্ট লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভেঙে ফেলা হলো। এই চূড়ান্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা শুধুমাত্র একজন শিল্পীর স্মৃতি ধ্বংস করে দেওয়া নয়, সমগ্র বাঙালি জাতির সাংস্কৃতিক চেতনার উপর আঘাত! ইনিই হলেন সেই অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যাঁর অঙ্কিত ‘ভারতমাতা’র চিত্র যা আমাদের জাতীয় পরিচয়কে রূপদান করেছিল। তিনি স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মীয় এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদী শিল্পকলার অন্যতম পথপ্রদর্শক।"
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Updates:সূত্রের খবরে অতর্কিতে হানা, তৃণমূলকর্মীর বাড়িতে মিলল কাশ্মীরের জঙ্গিদের হাতে থাকা স্টেনগান?
সুকান্ত আরও লিখেছেন, "আজ তাঁর বসতবাড়ি "আবাস" - কে গায়ের জোর দেখিয়ে ধ্বংস করা হলো। এই বাড়িটি তাঁর পুত্র কিনেছিলেন, যেখানে তিনি বাস করতেন, সেই জায়গা “অবনপল্লি” নামে পরিচিত হয়েছিল তা আজ ভাঙা হলো নির্বিকারভাবে।এটা কি নিছকই একটি বাড়ি ভাঙা? না, এটা ইতিহাসকে ধ্বংস করা, একটি স্মৃতিকে অপমান করা, সর্বোপরি বাঙালি জাতিসত্ত্বার আত্মপরিচয় মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা।যে পশ্চিমবঙ্গ একদিন ভারত কেশরী ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় হিন্দু বাঙালির সম্ভ্রম, সংস্কৃতি রক্ষার জন্য তৈরি করেছিলেন, সেই পশ্চিমবঙ্গেই আজ হিন্দু সাংস্কৃতিক গর্ব ক্রমশ ধূলিসাৎ করা হচ্ছে।এই অমার্জনীয় ঘটনা শুধু লজ্জাজনকই নয় সমগ্র বাঙালি জাতির জন্য অপমানজনক। সংস্কৃতিপ্রেমী, শিক্ষিত বাঙালি সমাজের প্রত্যেকের জেগে ওঠার সময় এখনই — নয়তো ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একদিন শুধুই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাবে।"
আরও পড়ুন- Coronavirus: ঝড়ের গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ, কলকাতায় করোনা আক্রান্ত মহিলার মৃত্যু, উদ্বেগ চরমে
যদিও এই ব্যাপারে বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বাড়িটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবারের স্মৃতি বিজড়িত, তাই সেটি ভাঙার কাজ বন্ধ করে দিয়ে বাড়ির গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।