তৃণমূল কংগ্রেসে নবীন-প্রবীণ বিবাদের মাঝেই ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে প্রবীণদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা করলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী রবিবার বিষ্ণুপুরে এক অনুষ্ঠানে প্রবীণদের শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাবেন অভিষেক। নানা সামাজিক কর্মসূচি পালন করা হবে। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক যেদিন অনুষ্ঠান করবেন সেদিন আবার ব্রিগেড সমাবেশ করবে ডিওয়াইএফআই।
এ যেন এক ঢিলে আপাতত তিন পাখি মারা হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রথমত, বছরের প্রথমেই দলের প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে শুরু হয়েছে আদি-নব্যর আকচা-আকচি। তৃণমূলের রাজনীতির ময়দানে একদিকে বাউন্সার, অন্যদিকে লাগাতার ওভারবাউন্ডারি। যার রেশ ছিল গতকাল, বুধবার পর্যন্ত। অবশ্য এতেও কৌশল দেখছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
তারই মধ্যে আগামী ৭ জানুয়ারি পৈলান যুব সংঘের মাঠে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের প্রবীণ নাগরিকদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন অভিষেক। ওই দিন রেকর্ড ভিড় হবে বলে আশা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহলের মতে, সাংগঠনিক ক্ষেত্রে বয়স হলে প্রোডাক্টিভিটি কমে যাওয়ার কথা বললেও সামাজিক ক্ষেত্রে অভিষেক যে প্রবীণদের পাশে আছেন, তা স্পষ্ট করেছেন এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
সম্প্রতি নিজের সাংসদ ক্ষেত্র ছাড়া দলের অন্য কোনও ভূমিকায় তিনি থাকতে চান না বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। নবীন ও প্রবীণদের বিতর্ক নিয়ে সম্প্রতি আর কোনও মন্তব্য করেননি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু নিজের কেন্দ্র নিয়ে যে তিনি ভাবছেন, তাও পরিস্কার এই অনুষ্ঠান ঘোষণার মধ্যে। লোকসভা নির্বাচনও দোরগোড়ায় চলে এসেছে। এর আগে ডায়মন্ড হারবার মডেলের কথা বলেছিলেন অভিষেক। তা নিয়েও দলের প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় হইচই শুরু করেছিলেন।
আরও পড়ুন- Premium: সংগ্রহ নয়, ওনার ঘরদোর জুড়ে শুধু ‘কালি এবং কলমে’র প্রেম
এদিকে ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ ডিওয়াইএফআইয়ের। সিপিএমের তাবড় নেতৃত্ব এই সমাবেশে হাজির থাকবেন। সমাবেশকে সফল করতে রাজ্যজুড়ে ইনসাফ যাত্রা করেছে বামেদের যুব সংগঠন। ওই রবিবারই ডায়মন্ড হারবারে কর্মসূচি অভিষেকের। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে ৩ ফেব্রুয়ারি বামেদের ব্রিগেডের দিন সন্ধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই।
তারপর মুখ্যমন্ত্রী ধর্মতলায় লাগাতার ধরনায় বসেছিলেন। সন্ধ্যের পর বামেদের ব্রিগেডের খবর উবে গিয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের মতে, অভিষেক ৭ জানুয়ারির অনুষ্ঠান ঘোষণা করে এক যোগে দল ও দলের বাইরে বার্তা দিলেন। ওই দিনেই কি নিজের অবস্থানও স্পষ্ট করবেন অভিষেক? সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।