নিয়োগ কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ 'মিডলম্যান' প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল। যা নিয়ে আগেই সরব হয়েছে তৃণমূল। শাসক দলের পক্ষ থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির গ্রেফতারি দাবি করা হয়েছিল। এবার সেই দাবিই তুললেন সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই থামেনি তিনি, নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক মামলায় রায়দানকারী কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন তিনি। যা বেশ তাৎপর্যবাহী। তৃণমূল সাংসদের দাবি, দিলীপ ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি হলে টাকা বা প্রয়োজনীয় নথি উদ্ধারের সম্ভাবনা ছিল।
কী বলেছেন অভিষেক?
মঙ্গলবার ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিলীপ ঘোষের গ্রেফতারের দাবি করেছেন। এই ইস্যুতে দলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন তিনি। বলেন, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানের সময় অর্পিতার নামে দলিল পাওয়া গিয়েছে। সে কারণে অর্পিতার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। প্রসন্ন রায়ের বাড়িতেও দিলীপ ঘোষের দলিল পাওয়া গেল। তা হলে কেন দিলীপের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হল না? হতে পারে সেখানে টাকা থাকত। অনেক প্রমাণ থাকত। যে কারণে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হলেন সেই একই কারণে এক্ষেত্রে কেন দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হল না?'
এরপরই অভিষেকের মুখে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম শোনা যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'কিছু দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন যাঁরা দোষী তাঁরা শাস্তি পাবেনই। তা হলে সেটা সুনিশ্চিত করুন। দিলীপ ঘোষেকে কেন গ্রেফতার করা হবে না? আমি প্রশ্ন রাখছি আদালতের কাছে।'
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর মানসিক অবস্থা ঠিক নেই, উদাহরণ তুলে যুক্তি অভিষেকের
উল্লেখ্য, এর আগে মূলত নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক নির্দেশে অসন্তোষ প্রকাশ করেত শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের। তারপরই গত সেপ্টেম্বরে নবান্ন অভিযানে বিজেপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে তাণ্ডবের অভিযোগ করতে গিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, 'বিজেপি কর্মীরা জানেন, বিচারব্যবস্থার একাংশের উপরে বিজেপির হাত রয়েছে৷ তাই আমাদের কিছু হবে না৷ হাইকোর্টে গেলেই জামিন পেয়ে যাবো৷'
আরও পড়ুন- আর রাখঢাক নয়, নতুন তৃণমূল ঠিক কী? এতদিনে স্পষ্ট করলেন অভিষেক
এর প্রেক্ষিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ক্ষোভ প্রকাশ করে রুল জারির হুঁশিয়ারি দিছিলেন। বলেছিলেন, 'আমি যদি ওনাকে ডেকে পাঠিয়ে বলি প্রমাণ করুন যে কার মাথার উপরে বিজেপি-র হাত আছে! না হলে মিথ্যে কথা বলার জন্য তিন মাস জেল খাটুন। 'আইনের ক্ষমতা সম্পর্কে আপনাদের কোনও ধারণাই নেই৷ বিচার বিভাগ যদি রেগে যায়, তাহলে আপনারা কোথায় থাকবেন?'
আরও পড়ুন- দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দোকানে চুরির অভিযোগ, জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা