Abhishek Banerjee On Protest Aganist Waqf (Amendment) Act: ওয়াকফ-প্রত্যাহারে অশান্তির স্রোত, মুর্শিদাবাদে 'হিংসার বলি ২', দাবি বিজেপির, মমতার পদত্যাগের দাবিতে হুঙ্কার শুভেন্দুর। সামশেরগঞ্জে ছুটলেন রাজ্যের ডিজিপি রাজীব কুমার। এবার রাজ্যের নানা প্রান্তে অশান্তির ঘটনায় মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ এদিন বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, " উন্নয়নের রাজনীতির মোকাবিলা করতে না পেরে কেউ কেউ বাংলাকে ধর্মের নামে ভেদাভেদ করে বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি বজায় রেখে, আমাদের শান্তি, সম্প্রীতি যাতে বিঘ্নিত না হয়, আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কেউ কেউ চায় বাংলায় যাতে আগুন জ্বলে। বাংলাকে ভাতে মারতে, পেটে মারতে। আমাদের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কেন্দ্রের এই অপচেষ্টা কিছুতেই বাস্তবায়িত হবে না"।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল মুর্শিদাবাদ। বিক্ষোভের জেরে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। এমনই অভিযোগ বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর। গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর উসকানিমূলক বক্তব্যকেই দায়ি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
মুর্শিদাবাদের অশান্তি ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেনা নামানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, "নূন্যতম লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করুন। রাজ্যে অরাজকতার আগুন জ্বেলে দিয়ে রাজনীতির রুটি সেঁকছেন আপনি। উসকানি আপনি দিয়েছেন তাই দায় আপনার, এখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে বিপাকে পড়ে আবেদন জানাচ্ছেন। তবে শুনে রাখুন, আপনার সৃষ্টি করা এই ধ্বংসকারী উন্মাদরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে, ওরা আপনার ওপর নির্ভরশীল নয় বরং আপনি ওদের ওপর নির্ভরশীল, তাই ওদের বয়ে গেছে আপনার আবেদন শুনতে। আর একটা বিষয় জেনে রাখুন আপনার ছাপ্পা মেরে জেতা বিধায়ক সাংসদদের হাতে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, গোটা মুর্শিদাবাদ ও মালদার মৌলবাদী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ এখন পিএফআই, সিমি ও আনসারুল বাংলা টিমের মতো জঙ্গি সংগঠনের হাতে"।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন (Waqf Amendment Act) প্রত্যাহারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের জেলায়-জেলায় প্রবল প্রতিবাদর স্রোত আছড়ে পড়েছে। শহর কলকাতাতেও বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে। তবে গোটা রাজ্যের মধ্যে ওয়াকফ আইন নিয়ে সবচেয়ে বেশি অশান্তি ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদে। জেলার জঙ্গিপুর দিয়ে শুরু হওয়া হিংসা, ক্রমেই ছড়িয়েছে সুতি, সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ানে। বেপরোয়াভাবে সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের অশান্তি বিধ্বস্ত জায়গাগুলিতে টহল দিচ্ছে BSF। শনিবারই গুজবে কান না দিয়ে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। একই বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
এক্স হ্যান্ডলে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনো অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না। প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান, রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না। দাঙ্গা যারা করছেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন। মনে রাখবেন, যে আইনের বিরুদ্ধে অনেকে উত্তেজিত, সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে। আমরা এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে বলেছি - আমরা এই আইনকে সমর্থন করিনা।"
এরই পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স হ্যান্ডলে এদিন আরও লিখেছেন, "এই আইন আমাদের রাজ্যে লাগুও হবে না। তাহলে দাঙ্গা কিসের? আরো মনে রাখবেন, দাঙ্গায় যারা উস্কানি দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা আমরা নেবো। কোনো হিংসাত্মক কার্যকলাপকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছেন। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন - এই আমার আবেদন।"