Advertisment

Abhishek Banerjee: তৃণমূলের নেতৃত্বে নিস্প্রভ 'যুবরাজ', নেপথ্যে কি বড় 'চানক্য' কৌশল?

TMC Dharna 2nf February: রাজ্যের পাওনা-গন্ডা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেন অভিষেক, এবার সেই আন্দোলনের রেশ ধরলেন মমতা। এটা শুধু কি দলের অভ্যন্তরীন সাংগঠনিক মতান্তর না নেতৃত্বের বিশেষ কৌশল?

author-image
Joyprakash Das
New Update
Abhishek Banerjee will be seen in Mamatas 2nd February dharna against central deprivation , কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে মমতার ২ ফেব্রুয়ারির ধর্নায় দেখা যাবে অভিষেক ব্যানার্জীকে?

মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Mamata's Dharna Against Central Deprivation: রাজ্যের পাওনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাগাতার ধরনা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর দিল্লির পর এই ধরনা চলেছিল কলকতায় রাজভবনের সামনে মঞ্চ বেধে। অভিষেক নিজেই জানিয়েছেন ধরনা তোলার নির্দেশের কথা। এদিকে ২ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে রেড রোডের পাশে মঞ্চ বেধে ধরনায় বসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসে সাংগঠনিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রে কি এমন ঘটছে যে অভিষেক নিজে নিষ্ক্রিয় থাকছেন? নিজে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্বেও প্রকাশ্যে নির্দেশের কথা বলছেন অভিষেক। তবে তাঁর মন রয়েছে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের প্রতি।

Advertisment

দলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর অভিষেক ঘোষণা করেছিলেন, 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতির কথা। তাছাড়া ভিন রাজ্যে জয়ের জন্যই তৃণমূল নির্বাচনে লড়াই করতে যাচ্ছে বলেও তাঁর দাবি ছিল। দুদিন আগেও বয়স নিয়ে নিজের আগের বক্তব্যেই অনড়় রয়েছেন বলে স্পষ্ট করেছেন অভিষেক। কিন্তু ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ শুধু নিজের লোকসভা কেন্দ্র ছাড়া দলের কোনও বিষয় নিয়েই ভাবছেন না। এমনকী বীরভূমের দলীয় সাংগঠনিক বৈঠকেও তিনি হাজির থাকেননি। এটা স্পষ্ট অভিষেকের ঘোষিত নানা নীতির সঙ্গে দলের প্রবীণদের বড় অংশই সহমত পোষণ করছেন না।

আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: জোট রাজনীতিতে কোন পথে তৃণমূল? গনি গড়ে স্পষ্ট ঘোষণা মমতার

বিশেষত বর্ষীয়াণ সাংসদ ও নেতৃত্বের অনেকেই সরাসরি আদি তৃণমূল নিয়ে সরব হয়েছিলেন। কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তো ঘোষণা করেই দিয়েছেন, 'দলনেত্রী লোকসভায় প্রার্থী করলে লড়াই করব।' অভিষেক নয় দলের একাংশ এখনও মমতাতেই ভরসা রাখছেন বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিতে দ্বিধা করছেন না। লোকসভা ভোটের আগে তা আবার চাগার দিয়েছে। দলের সাংগঠনিক নেতৃত্বে নিজেকে নিস্প্রভ করে রেখেছেন অভিষেক। দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলছেন, দল কাজ দিলে তিনি কাজ করবেন!

রাজ্যের পাওনা-গন্ডা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেন অভিষেক, এবার সেই আন্দোলনের রেশ ধরলেন মমতা। এটা শুধু কি দলের অভ্যন্তরীন সাংগঠনিক মতান্তর না নেতৃত্বের বিশেষ কৌশল? তা নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক মহল। প্রবীণ নেতৃত্ব নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেকের সঙ্গে যে একমত নয় তা প্রকাশ্যে বলেছেন। 'এক ব্যক্তি এক পদ'ও যে কার্যকরী হয়নি, তা-ও স্পষ্ট। আদি তৃণমূল বা বয়সজনিত বিতর্ক নিয়ে প্রবীণদের অনেকেই অভিষেককে ইঙ্গিত করে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তাঁরা আবার দলনেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন, মঞ্চেও বসছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, দলের সর্বভারতীয় পদে থাকা সত্বেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি হতে বাধ্য।

আরও পড়ুন- Rahul Gandhi: রাহুল গান্ধীর গাড়ির কাচ ভাঙচুর! কোথায় ঘটেছে? মুখ খুললেন মমতা

তৃণমূল কংগ্রেসে যুব সংগঠন থাকা সত্বেও যুবা গঠন করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঁদুরে মেঘ দেখেছিলেন সেদিনের তরুণ তুর্কী তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তারপর ওই দুই সংগঠন মিলিয়ে দেওয়া হল। পরবর্তীতে সৌমিত্র খাঁ খানিকের রাজ্য সভাপতি। শুভ্রাংশু রায় হয়েছিলেন সহসভাপতি। তৃণমূলের নেতৃত্ব দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারে ব্যস্ত থাকায় কি মুকুলরাজ শুরু হয়ে গেল! রাজনীতির কূটকৌশল যে কি তা পরে টের পেয়েছিলেন অনেকেই। নতুন কমিটি ঘোষণার কয়েক মাসের মধ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হয়েছিলেন যুব তৃণমূলের সভাপতি। ২০২১ -এ দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। রাজনৈতিক মহলের মতে, কত পা এগিয়ে কত পা পিছোতে হবে তা মক্ষম ভাবেই বোঝেন তৃণমূল নেত্রী। যখন পরিস্থিতি হয়েছে সংগঠনে কয়েক কদম এগিয়ে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আবার পরিস্থিতি অনুযায়ী গতি শ্লথও করেছেন। দলের প্রবীণরা চিৎকার-চেঁচামেচি করে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখার মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

২০২২ পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা তৈরি নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছিল। প্রতি মুহূর্তে প্রার্থী তালিকায় বদল ঘটেছে। একাধিক পুরসভায় প্রার্থী নিয়ে অভিষেকের মতামত নেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে বাংলা জুড়ে ৬০ দিনের পদযাত্রা করে পঞ্চায়েত নির্বাচন অনেকটাই নিজের কব্জায় এনেছেন। এবার ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। পুরসভা নির্বাচনের মতোই প্রার্থী নিয়ে প্রবীণদের মনে সংশয় তৈরি হওয়ায় বয়সজনিত বিতর্ক জারি রয়েছে। ডায়মন্ড হারবার ছাড়া অভিষেক নিজেকে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে গুটিয়ে রেখেছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের সময় ফের পঞ্চায়েতের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। অযথা শক্তি ক্ষয়ের তো কোনও কারণ নেই! সময়ই তার প্রমাণ দেবে।

abhishek banerjee Mamata Banerjee tmc
Advertisment