Kunal Ghosh On Abhishek : সামনেই উপনির্বাচন। রাজ্যে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনায় অনেকটাই 'ব্যাকফুটে' শাসক দল। আরজি কর কাণ্ডে বেনজির প্রতিবাদের সাক্ষী থেকেছে গোটা বাংলা। বারে বারে বিরোধীদের পক্ষে তোলা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি। এর মাঝেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষের। জন্মদিনের প্রাক্কালে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কেই রাজ্যের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর এই পোস্টের পরই ঝড় উঠেছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। সিপিএম, বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, কুনালের এই পোস্টে'ই প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি।
২৬ এর বিধানসভা ভোটের আগে ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত শাসকদল। ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিজেপিও। ২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগেই রাজ্যের ভাবী মুখ্যমন্ত্রীর নাম প্রকাশ্যে আনলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। কুণাল লেখেন, "মমতাদির পর একদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক। মমতাদি ঘরানার সময়োপযোগী ধারক ও বাহক অভিষেক। যতদিন আমি তৃণমূলে থাকব, ততদিনই অভিষেক আমার নেতা।” বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন। তার আগে দলের হেভিওয়েট নেতার গুরুত্বপূর্ণ এই মন্তব্য নিঃসন্দেহেই তাৎপর্যপূর্ণ, বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
বাংলার ফুটবল ইতিহাসে বেনজির ঘটনা! নির্লজ্জ প্রচার বলে তোপ শুভেন্দুর
ধাপে ধাপে অভিষেকের কাঁধে এসেছে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এক সময় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন মুকুল রায়। মুকুল জমানার পর তৃণমূলে অভিষেকে বিরুদ্ধে সরব হন অনেক নেতাই। ২১ এর বিধান সভার আগেই মূলত অভিষেকের বিরুদ্ধে তোপ দেগে দল ছাড়েন দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। কয়লা কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে গরু পাচার একের পর এক ইস্যুতে অভিষেকের বিরুদ্ধে সরব হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এবার সেই অভিষেকই রাজ্যের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করে দিলেন কুনাল ঘোষ।
ঠিক কী লিখেছেন তিনি তার পোস্টে? কুনাল লিখেছেন, "রাত পোহালেই
@abhishekaitc- এর জন্মদিন। খুব ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, চোখের সমস্যাটা একদম ঠিক হয়ে যাক। কম বয়সেই যোগ্য নেতৃত্বের যে ছাপ অভিষেক রাখছে, সময়ের সঙ্গে তা আরও ব্যাপকতর হতে থাকুক। আমি নিজে সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি, এই উদীয়মান তারকার উপর গুরুত্বসহ নজর রাখবই। বয়সে ছোট, কিন্তু যতদিন আমি তৃণমূলে সক্রিয় থাকব, ও আমার নেতা। তার বাইরে স্নেহ করি, ভালোবাসি"।
পরপর দু'দিন পিছোল আরজি কর মামলার শুনানি, পরবর্তী শুনানির দিনক্ষণ জানাল শীর্ষ আদালত
এর পাশাপাশি কুনাল ঘোষ লিখেছেন, "মমতাদিকে দীর্ঘকাল দেখেছি, এখন অভিষেককেও দেখছি। দ্রুত আরও পরিণত। আবেগের সঙ্গে মিশছে আধুনিক পদ্ধতি, প্রযুক্তি। আরও ধারালো হচ্ছে অভিষেক। সময়ের নিয়মে মমতাদির পর একদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবে অভিষেক, তৃণমূল কংগ্রেসের সেনাপতি থেকে যুগান্তরের পতাকায় কান্ডারী। মমতাদির ঘরানার সময়োপযোগী ধারক ও বাহক। মমতাদির নেতৃত্ব চলতে থাকুক, আর তার মধ্যেই আগামীর পদধ্বনি হতে থাকুক বাংলার রাজনৈতিক সামাজিক চালচিত্রে"।
রাত পোহালেই @abhishekaitc এর জন্মদিন।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) November 6, 2024
খুব ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, চোখের সমস্যাটা একদম ঠিক হয়ে যাক। কম বয়সেই যোগ্য নেতৃত্বের যে ছাপ অভিষেক রাখছে, সময়ের সঙ্গে তা আরও ব্যাপকতর হতে থাকুক।
আমি নিজে সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি, এই উদীয়মান তারকার উপর গুরুত্বসহ নজর রাখবই।… pic.twitter.com/tw71XSUnoj
এদিকে কুনালের এই পোস্টের পরই রাজ্যের শাসকদলকে খোঁচা দিতে ছাড়েন নি বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরি বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, তৃণমূলে দিদি এবং খোকাবাবুর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে। ধীরে ধীরে বিষয়টা সামনে আসছে। তৃণমূলে দু'টি গোষ্ঠী রয়েছে। যাঁরা দল তৈরির সময় থেকে রয়েছেন, তাঁরা দিদির পক্ষে। আর ভুঁইফোড় কিছু চোর ভদ্রলোক হতে চাইছেন, তাঁরা খোকাবাবুর দলে"।
অন্যদিকে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "কুণাল ঘোষের বলার অপেক্ষা রাখে না সরকারের বাইরে থেকে রাজ্যে আরও একটা সরকার চলছে। এটা বাংলার মানুষের জানা। এই জন্যই পশ্চিমবঙ্গের এমন অবস্থা"। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, " আমি অনেক আগে বলেছিলাম, পশ্চিমবঙ্গে শিন্ডে তৈরি করার প্রক্রিয়া চলছে। তৃণমূলের মধ্যে থেকে কাউকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি সরকার গড়ার চেষ্টা করছে। যদিও মানুষ তৃণমূল এবং বিজেপি-কে ভরসা করছেন না। শিন্ডে গড়ার ইঙ্গিত হয়ত দিয়ে রাখলেন কুণাল।"