Advertisment

Anubrata Mondal: ২ বছরে অনেক পাল্টেছেন অনুব্রত, চড়াম-চড়াম নয়, বিজয়া সম্মিলনীতে অহিংসার বার্তা নেতা-কর্মীদের

Anubrata Mondal: প্রায় ২ বছর পর প্রকাশ্য সমাবেশে জেলমুক্ত অনুব্রত মণ্ডল। বিজয়া সম্মিলনী থেকে চড়াম চড়াম ঢাক, নকুল দানা, গুড়বাতাসা, পাঁচনের দাওয়াই দেওয়ার কথা শোনা গেল না বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার মুখে।

author-image
Ashis Kumar Mondal
আপডেট করা হয়েছে
New Update
Anubrata Mondal: ২ বছর পর প্রকাশ্য সমাবেশে অনুব্রত মণ্ডল

Anubrata Mondal: ২ বছর পর প্রকাশ্য সমাবেশে অনুব্রত মণ্ডল

Anubrata Mondal: 'আমি নেতা নই, আপনাদের মতো একজন কর্মী। আমরা কেউ নেতা সাজব না। আমাদের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলতে হবে। আমাদের নেত্রী মমতা  বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মী হয়ে মানুষের পাশে থাকব।' বৃহস্পতিবার বীরভূমের মুরারইয়ের দুটি ব্লকের বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠান থেকে এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।

Advertisment

দীর্ঘ ২ বছর বেশি সময় ধরে জেলবন্দি দশা থেকে মুক্তি পেয়ে প্রথম প্রকাশ্য জনসভায় উপস্থিত হলেন গরুপাচার মামলায় অভিযুক্ত তিহার জেল থেকে জামিনে মুক্ত অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। নিজের গড়ে ফিরে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন তিনি। সেই মতো এদিন মুরারই ১ নম্বর ব্লকের পশুহাটে এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান সারলেন অনুব্রত মণ্ডল। বিকেলে মুরারই ২ নম্বর ব্লকের হিয়াতনগরে দ্বিতীয় সভা করেন।

প্রথম সভা থেকে এদিন দেখা গেল অন্য অনুব্রত মণ্ডলকে। চড়াম চড়াম ঢাক, নকুল দানা, গুড়বাতাসা, পাঁচনের দাওয়াই দেওয়ার কথা শোনা গেল না অনুব্রতর গলায়। হুঙ্কারের বদলে দলীয় কর্মীদের অশান্তি না করার বার্তা দিলেন তিনি। তাঁর অবর্তমানে নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে নিচুতলার কর্মীদের প্রশংসা করলেন বারংবার। ২ বছর পর প্রথম সভায় বহু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক ভঙ্গি ও বক্তব্য থেকে। 

কর্মীদের শান্তির বার্তার পাশাপাশি নিজেও সকলকে নিয়ে চলার শপথ নিলেন। বললেন, “সকলে মিলে দল করলে দল আরও বৃদ্ধি পাবে। উন্নয়ন বেশি হবে, মানুষের ভাল করতে হবে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও জয়ধ্বনি দিতে শোনা গেল অনুব্রতকে। অনুব্রত বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল বক্তা। তাঁর বক্তব্য শুনবেন। খুব সুন্দর করে বক্তব্য রাখেন অভিষেক”।

আরও পড়ুন বাঁধের কাজে বিস্তর 'চুরি', এলাকায় মন্ত্রীকে দেখেই তেড়ে গেলেন মহিলারা!

আর কী বললেন অনুব্রত মণ্ডল?

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের নামও মুখে আনেন দুটি মঞ্চে। বলেন, “কাজল শেখ, সাংসদ শতাব্দী রায়, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ফোন করে অনুষ্ঠানে আসার কথা বলেছিলাম। বলেছিলাম সকলে মিলে একসঙ্গে বিজয়া সম্মেলনী করব কর্মীদের সঙ্গে। কোন কারণে তাঁরা আসতে পারেননি। পরের অনুষ্ঠান গুলিতে নিশ্চয় উপস্থিত থাকবেন”। তবে একদা অনুব্রত মণ্ডলের ডান হাত বলে পরিচিত লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ওরফে রানাকে দুটি অনুষ্ঠানেই দেখা যায়নি। অবশ্য অনুব্রত মুখে তাঁর নামও নেননি।

তবে এদিন মুরারই ১ নম্বর ব্লকের সভাস্থলে অনুব্রত মণ্ডল পৌঁছাতেই সভায় উপস্থিত কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলে কিল, চর, ঘুসি। অনুব্রত মণ্ডল সভাস্থল ছেড়ে যেতেই ফের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বাঁশ নিয়ে মারপিট শুরু হয়। ঘটনায় উভয় গোষ্ঠীর তিন জন রক্তাক্ত হন। তাঁদের মুরারই গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে এনিয়ে মুখ খুলতে চাননি অনুব্রত। মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একটি কথায় বলেন, “সবাইকে নিয়ে চলার আনন্দই আলাদা। আমি সবাইকে নিয়ে চলব”।

আরও পড়ুন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো, ফের যোগ অনশনে?

এদিন আবার অনুব্রত মণ্ডলের সভা মঞ্চ হেলে পড়ে বিপত্তি। তড়িঘড়ি মঞ্চ থেকে নামান হয় অনুব্রত মণ্ডল-সহ দলের নেতা-কর্মীদের। ঘটনাটি বীরভূমের মুরারই ২ নম্বর ব্লকের পাইকরে হাই মাদ্রাসায়। দ্বিতীয় সভাটি ছিল মুরারই ২ ব্লকের পাইকর হাইমাদ্রাসার মাঠে। সেই মাঠে বাঁশ দড়ি দিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। অনুব্রত মণ্ডল মঞ্চে উপস্থিত হতেই তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী মঞ্চে উঠে পড়েন। অনুব্রত মণ্ডলকে ফুলের মালা দিয়ে দিতে সংবর্ধনা করার সময় হঠাৎই মঞ্চ বসে যায়। হেলে পড়ে মঞ্চের বাঁশ ও কাঠামো। ঘটনা বুঝতে পেরে মঞ্চের কাছে উপস্থিত দলীয় কর্মী ও সমর্থকেরা মঞ্চ ধরে ফেলেন।  ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সভাস্থলে। তাতেই অনুব্রত মণ্ডলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ২ বছর রাজনীতিতে না থাকলেও এদিনের সভায় কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতি বুঝিয়ে দেয় অনুব্রতর জনপ্রিয়তায় কোনও ভাটা পরেনি।

tmc anubrata mondal Birbhum West Bengal Bijoya Sammilani Anubrata Mandol
Advertisment