/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/09/students.jpg)
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার বিশেষ প্রতিবেদন।
যাদবপুরে প্রথম বর্ষের ছাত্রের ব়্যাগিংয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ৪৩ দিন কেটে গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন হস্টেলের অব্য়বস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আদৌ সারবছর কি পরিস্থিতি হয় এই হস্টেলগুলিতে? হস্টেলগুলিতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার 'উদ্যোগ' কতটা সফল হবে? সারাবছর কি নজরদারি চালাতে সক্ষম হবে কর্তৃপক্ষ? দাদাদের 'দাদাগিরি' কি পুরোপুরি বন্ধ হবে? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষামহলে।
বছরের পর বছর আবেদন করেও হস্টেলে জায়গা হয় না পড়ুয়াদের। সে যাদবপুর হোক বা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু সেই হস্টেলেই বছরের পর বছর থেকে যায় প্রাক্তনীরা। এমনকী অধ্যাপকদের একাংশও ছাত্রদের হস্টেলে থেকেছেন। এমন ঘটনাও সামনে এসেছে। যাদবপুরে ব়্যাগিংয়ে ছাত্র মৃত্যুর পরে হস্টেলের অজানা এমন নানা তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। প্রথমবর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের পৃথক রাখার ব্য়বস্থা এখনও সম্পূর্ণ করতে পারেনি অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়। আদৌ হস্টেলের সমস্যার কি সমাধান হবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের রাজ্য সম্পাদক সঙ্গীত ভট্টাচার্য বলেন, 'যাদবপুরে লাল সন্ত্রাস চলছে। অতি বামপন্থীরা প্রকাশ্যে বলছে আমরা মাওবাদী। তারপরেও রাজ্য সরকার সেখানে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিরোধী ছাত্র সংগঠন হিসাবে আমরা যখন পথে নামছি আমাদের দমিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ কেস দিচ্ছে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদত দিচ্ছে রাজ্য সরকার। যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্য়ালয় লালেদের সঙ্গে তৃণমূল ভাগাভাগি করে নিয়েছে। বাম ও রাজ্য সরকার দু'পক্ষই দায়ী হস্টেলের অব্যবস্থা জন্য। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে থাকতেন অধ্যাপকদের একাংশ। অবশেষে চাপে পড়ে তাঁরা হস্টেল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, 'বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এরকম কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই।'
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নবাগত পড়ুয়ারা হাজার চেষ্টা করেও হস্টেল জোটাতে পারেন না। যদিও ছাত্রনেতাদের হাতে পায়ে ধরে হস্টেল জোটে, তাতে নানা ধরনের শর্তাবলী রয়েছে। 'ইন্ট্রো'র অত্যাচার ছাড়াও সংশ্লিষ্ট ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব যেমন যেমন নির্দেশ দেবেন তেমন কাজ করতে বাধ্য থাকবেন ওই হস্টেল পাওয়া ছাত্র-ছাত্রী। এভাবে হস্টেল পাওয়া এক ছাত্রীর কথায়, আমার মনে হয়েছিল কেন দাদাদের চ্যানেলে হস্টেল নিয়েছিলাম। নানা ভাবে ভোগান্তি হয়েছিল আমার। সেকথা এখনও ভুলতে পারছি না। এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, 'ব়্যাগিং নিয়ে জোরালো আন্দোলন চলছে। খুনীদের শাস্তি চাই। অন্যরা চুপ হয়ে গিয়েছে। সাধারণ ভাবে হস্টেলটা ছাত্রদের। অধ্যাপক, গবেষকদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা থাকা উচিত। কেন তাঁরা হস্টেলে থাকছেন সেটা খুব বড় প্রশ্ন।'
শিক্ষামহলের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলির সঠিক তথ্য থাকা খুব জরুরি। হস্টেলে কতগুলি সিট? কতজন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে? প্রতিদিন কতজনের রান্না হয়? এই তথ্যেই বিস্তর গলদের অভিযোগ রয়েছে। যাদবপুর কাণ্ডের পর কি পুরোপুরি এই হস্টেল সংস্কৃতির কি বিনাশ হবে? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। হস্টেলে হস্টেলে নজরদারি আদৌ কতদিন চালু থাকবে? সেই প্রশ্নও উঠছে সর্বত্র।