কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিপুল জয়ে এরাজ্যের নেতৃত্ব থেকে কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে বিপুল জয়ে উদ্বুদ্ধ রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে একযোগে হাতশিবিরে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য রাজ্য সভাপতির কাছে আবেদন করেছেন, 'কর্মীদের দলে নিলেও নেতৃত্ব স্থানীয়দের দলে নিতে হলে সতর্ক হতে হবে।'
এর আগে হিমাচলপ্রদেশে কংগ্রেস বিজেপিকে পরাজিত করে। এবার কর্নাটকে ব্যাপক ব্যবধানে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। প্রবীন কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'সাধারণ মানুষের কাছে কম্পার্টমেন্ট একেবারে ভাগ হয়ে গিয়েছে। বিজেপি ও অ্যান্টি বিজেপি। প্রো-বিজেপির লীডারশিপ দিচ্ছে বিজেপি, আর অ্যান্টি বিজেপির লিডারশিপ দেবে কংগ্রেস। কংগ্রেসের কম্পার্টমেন্টে যে আসবে আসবে কেউ তো বাধা দেয়নি। কিন্তু বিজেপিকে খুশি করার জন্য যারা কংগ্রেসের পিছনে লাগছে তাঁদের নিশ্চয় এই ধারনা স্পষ্ট হওয়া উচিত।' তাঁর দাবি, 'গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে কংগ্রেসের ক্ষতি করতে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি বিজেপিকেও খুশি করেছে তৃণমূল।'
কর্নাটকের জয়ের পর এরাজ্যের কংগ্রেসের কর্মীরা ভীষনভাবে উৎসাহিত হবে বলে মনে করছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'কর্নাটকে লড়াই ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে। অর্ডার পাওয়ার আগেই ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৪০ শতাংশ নেওয়া হচ্ছিল। সেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় লড়াই ছিল কংগ্রেসের। পশ্চিমবাংলায় সেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ হবে কোনও সন্দেহ নেই।' তিনি বলেন, 'সর্বোপরি যে ধারনা তৈরি হচ্ছিল মোদি মোদি মোদি, এখন পরাজয়ের ভারটা ওনাকেও নিতে হবে। ত্রিপুরায় জয় হলে মোদির নামে ধ্বনি পরাজয় হলে ওনার দায় কেন হবে না?'
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে বিধানসভায় খাতা খুলেছে কংগ্রেস। মালদা ও মুর্শিদাবাদে ইতিমধ্যে তৃণমূল থেকে কেউ কেউ কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। কর্নাটকে জয়ের ফলে সেই ধারা বাড়তে পারে বলে মনে করছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'বিজেপিকে সরাতে গেলে কংগ্রেসকেই দরকার। ধর্ম নিরপেক্ষতার প্রতীক কংগ্রেস। ঐক্যবদ্ধ ভারতের প্রতীক কংগ্রেস। এদিক ওদিক না তাকিয়ে বাংলার মানুষ সব কংগ্রেসে চলে আসুন। বিজেপিকে হারাতে গেলে কংগ্রেস অপরিহার্য।' তবে দলে নেওয়া নিয়ে প্রদেশ সভাপতিকে সতর্ক করেছেন রাজ্যসভার প্রবীণ সাংসদ। প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'কংগ্রেসের সভাপতিকে অনুরোধ করব কর্মীদের নেওয়া হোক কিন্তু নেতৃত্বকে নিতে গেলে একটু ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত। নাহলে এই স্রোতের মধ্যে কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত লোকও যদি ঢুকে যায় তাহলে পার্টিটাকে আবার দূষিত করবে।' উল্লেখ্য, এরাজ্যে তৃণমূল থেকে একাধিক নেতৃত্ব বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময় গেরুয়া শিবিরের একাংশ প্রশ্ন তুলেছিল, দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের কেন দলে নেওয়া হচ্ছে। তাসত্বেও কিন্তু তা আটকানো যায়নি।