জালে পড়ে গুরুতর জখম হয় একটি বিষধর সাপ। তারপর একটানা বেশ কিছুদিন ধরে চলে আহত সাপের চিকিৎসা। বছর চারেক পরম যত্নে সাপটির দেখভাল করেছেন ব্যান্ডেলের সর্পবিশারদ চন্দন ক্লেমেন্ট সিং। শেষমেশ বিষধর শাঁখামুটিকে জঙ্গলে ছাড়লেন যুবক।
বছর চারেক আগে ব্যান্ডেলের কাছে সরস্বতী নদীর জালে আটকে পড়েছিল একটি শাঁখামুটি সাপ। সর্পবিশারদ চন্দন ক্লেমেন্ট সিং খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করেন। সাপটি মারাত্মকভাবে জখম হয়েছিল। তার সারা গায়ে জালের তারের আঘাত ছিল স্পষ্ট। ব্যান্ডেলের বাসিন্দা চন্দন সাপটিকে বাড়িতে এনে শুশ্রূষা করতে থাকেন।
সাপটির ক্ষতে মলম লাগিয়ে চলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। এরপর একটি ড্রামে সাপটিকে রেখে মশারি ঢাকা দিয়ে দেওয়া হয়। সাপটির ক্ষতস্থানে যাতে অন্য পোকা বসতে না পারে সেব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি ছিল চন্দনের। এভাবেই কাটে মাসের পর মাস। প্রথমদিকে কিছু খেতে চাইত না সাপটি। একপ্রকার জোর করেই তাকে খাওয়াতেন চন্দন।

আরও পড়ুন- বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন যুবকের যৌনাঙ্গে ব্লেডের কোপ, ধৃত প্রতিবেশী
এই জাতের সাপ আবার সাপই খায়। হেলে, মেটুলি, জলঢোঁড়া ইত্যাদি সাপ ধরে এনে খাওয়ানো হতো শাঁখামুটি সাপটিকে। আদর করে চন্দন সাপটির নাম দেন সুন্দরী। সাপটি সুস্থ হতেই তাকে নিয়ে এদিক-ওদিক বেড়াতেও শুরু করেন চন্দন। এমনকী তাকে পুকুরে নামিয়ে সাঁতারও কাটিয়েছেন চন্দন। ক্রমশ সুস্থ হয় সুন্দরী। এরপর নিরাপদ জায়গায় তাকে ছেড়ে দেওয়ার পালা।
কিন্তু ঠিক কোথায় সুন্দরীকে ছাড়া হবে তা ভেবে পাচ্ছিলেন না চন্দন। অবশেষে হুগলির মগরার কাছে কুন্তী নদীর ধারে তাকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করেন তিনি। সেই মতো ওই জায়গাতেই ছাড়া হয় সুন্দরীকে। ছাড়া পেতেই দিব্যি নদী পেরিয়ে জঙ্গলে চলে যায় সাপটি। চার বছরের স্মৃতি নিয়ে ভারাক্রান্ত মনে বাড়ি ফেরেন চন্দন।