AAIB Report On Air India Flight Crash: আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ, এক সেকেন্ডে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল উভয় ইঞ্জিন! চাঞ্চল্যকর তথ্য AAIB-এর রিপোর্টে
আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করল বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB)। ১২ জুন দুপুরে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং 787-8 ড্রিমলাইনার বিমানটি টেক অফের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে একাধিক চমকপ্রদ তথ্য। AAIB জানিয়েছে, দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল বিমানের উভয় ইঞ্জিনের হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া।
কী বলা হয়েছে তদন্ত রিপোর্টে?
▶︎ দুর্ঘটনার সময়:
১২ জুন ২০২৫, দুপুর ১:৩৯ (IST)। বিমানটি টেকঅফের মাত্র ২ মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়ে।
▶︎ হতাহতের পরিসংখ্যান:
মোট ২৬০ জনের মৃত্যু — ২২৯ জন যাত্রী, ১২ জন ক্রু সদস্য এবং ১৯ জন সাধারণ মানুষ। দুর্ঘটনায় বিমানের একমাত্র যাত্রী গুরুতর আহত অবস্থায় বেঁচে যান।
▶︎ বিমানটি কোথায় ভেঙে পড়ে?
রানওয়ে থেকে মাত্র ১ কিমি দূরে বিজে মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের ভবনে ধাক্কা মারে বিমানটি। ধ্বংসাবশেষ ৪০০০x১০০০ ফুট জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
▶︎ ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার কারণ?
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক সেকেন্ডের ব্যবধানে বিমানটির দুটি জ্বালানি কন্ট্রোল সুইচ 'RUN' থেকে 'CUTOFF' মোডে চলে যায়। ফলে হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় উভয় ইঞ্জিন। ব্ল্যাক বক্স অনুযায়ী, পাইলটরা ইঞ্জিন পুনরায় চালু করার চেষ্টা করলেও একটি ইঞ্জিন স্টার্ট নিতে ব্যর্থ হয়।
▶︎ ককপিট কথোপকথন:
এক পাইলট অপর পাইলটকে জিজ্ঞাসা করেন, "তুমি ইঞ্জিন বন্ধ করেছো?" জবাবে তিনি বলেন, "আমি করিনি।"
এই কথোপকথন থেকেই স্পস্ট ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার কারণ সিস্টেমজনিত সমস্যা — তবে মনুষ্যসৃষ্ট ত্রুটির বিষয়টি পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়নি।
▶︎ পাইলট ও ফ্লাইটের অবস্থা:
ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল এবং সহ-পাইলট ক্লাইভ কুন্ডার — উভয়েই সুস্থ এবং যথেষ্ট অভিজ্ঞ ছিলেন।
▶︎ ব্ল্যাক বক্স বিশ্লেষণ:
একটি ব্ল্যাক বক্স থেকে ৪৬ ঘণ্টার ফ্লাইট ডেটা ও ২ ঘণ্টার ককপিট অডিও উদ্ধার হয়েছে। আরেকটি রেকর্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা থেকে তথ্য উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
▶︎ টেকনিক্যাল অবস্থা ও তদন্ত সহযোগী দেশ:
বিমানটির ইঞ্জিন ছিল GE GENx-1B এবং এটি ২০১২ সালে নির্মিত। ওড়ার আগে বিমানে কোনও বড় ত্রুটি ছিল না। ভারতের AAIB ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র (NTSB), ব্রিটেন (AAIB-UK), কানাডা ও পর্তুগালের বিশেষজ্ঞরা তদন্তে সাহায্য করছেন।
AAIB-এর ১০টি চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ
- টেক-অফের মাত্র ২ মিনিটের মধ্যে ইঞ্জিন বন্ধ
- দু’টি ইঞ্জিন একসঙ্গে বন্ধ হওয়া অত্যন্ত অস্বাভাবিক
- ককপিটে কেউ ইঞ্জিন বন্ধ করেননি, তবু বন্ধ হলো, কিন্তু কেন?
- ব্ল্যাক বক্স অডিওতে ধরা পড়েছে পাইলটদের মধ্যে বিভ্রান্তি
- একটি ইঞ্জিন পুনরায় চালু হয়নি
- RAT (emergency power) স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়
- ফ্লাইটের আগে বড় কোনও ত্রুটি ধরা পড়েনি
- ওজন ও কার্গো সবই নিয়ম অনুযায়ী ছিল
- ৪০০০ ফুট এলাকাজুড়ে ধ্বংসাবশেষ
- দুর্ঘটনার সময় একমাত্র এক যাত্রী বেঁচে যান
- এখনও চলছে চূড়ান্ত তদন্ত
AAIB জানিয়েছে, এটি একটি প্রাথমিক রিপোর্ট। চূড়ান্ত রিপোর্ট আসতে আরও সময় লাগবে। তবে এই ঘটনায় প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং সিস্টেম ব্যর্থতার সম্ভাবনাই উঠে আসছে।