জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের নেতৃত্ব মানতে নারাজ তৃণমূল ও সমাজবাদী পার্টি, শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-অখিলেশ যাদব বৈঠক শেষে দু'তরফেই এমন ইঙ্গিত মিলেছে। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব দলের জাতীয় কার্যনির্বাহী সমিতির দু'দিনের বৈঠকের জন্য কলকাতায় এসেছেন। শুক্রবার সকালে কলকাতায় পৌঁছে বিকেলেই তিনি কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। মমতার সঙ্গে বৈঠকের আগে, বাংলায় বিজেপিকে আটকে দেওয়ার জন্য তৃণমূল সুপ্রিমোর ভূয়সী প্রশংসা শোনা গিযেছিল সপা প্রধানের মুখে। এমনকী উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির লড়াইয়ের সঙ্গে বাংলায় তৃণমূলের লড়াইকে সমার্থক বলেও বর্ণনা করেছিলেন মুলায়ম-পুত্র।
সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজদেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের নেতৃত্বকে স্বীকার না করে 'তৃতীয় শক্তি' তৈরিতেই বেশি আগ্রহী তৃণমূল সুপ্রিমো। আগামী সপ্তাহেই ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজু জনতা দল প্রধান নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ভুবনেশ্বর থেকেই এরপর দিল্লিতে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। সেখানে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গেও কথা হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এদিকে জাতীয় রাজনীতিতে সোনিয়া-রাহুলদের নেতৃত্বের বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই চলতে আগ্রহী সপা, এদিন সরাসরি সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন সপা প্রধান অখিলেশ যাদব। তাঁর কথায়, “আমরা যদি বাংলায় বিজেপিকে হারাতে পারি তবে আমরা উত্তরপ্রদেশেও তাদের হারাতে পারব। আমাদের ফোকাস উত্তরপ্রদেশ এবং দেশের বাকি অংশ থেকে বিজেপিকে সরিয়ে দেওয়া।”
আরও পড়ুন- ‘প্রতিটি সমাধানেও সমস্যা খোঁজেন অনেকে’, তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য রাজ্যপালের
একুশের নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে বাংলায় তৃণমূলের জয়জয়কার সম্পর্কে অখিলেশ যাদব আরও বলেন, “দিদি (মমতা) বাংলায় লড়াই করছেন, আমরা উত্তরপ্রদেশে লড়াই করছি। আমাদের দল দিদির সঙ্গে রয়েছে। আমরা কীভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে থাকতে পারি? আমরা বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয়ের থেকে সমান দূরত্বে আছি।”
আরও পড়ুন- আজ প্রবল ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস, তালিকায় কোন কোন জেলা, জানুন লেটেস্ট আপডেট
অন্যদিকে, শুক্রবার মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁর বাড়িতে দলের বিধায়ক-সাংসদ ও অন্য পদাধিকারীদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠক শেষে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'দল বিজেপি বা কংগ্রেসের দিকে তাকাচ্ছে না। আঞ্চলিক দলগুলিকে একত্রিত করার চেষ্টা চলবে। এরাজ্যে ও জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তৃণমূল প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আমাদের ক্ষমতা আরও বাড়াব এবং আমাদের নিজস্ব রাজনীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করব।''
আরও পড়ুন- সাঁইবাড়ির হত্যাকাণ্ড: কমিশনের পর কমিশন! পালাবদলের পরও ফল দূরস্ত, হতাশ পরিবার
দিল্লিতে সংসদের ভিতরে এবং বাইরে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছে বিজেপি, সে প্রসঙ্গে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এটি বিজেপির বৃহত্তর নকশার অংশ।' তাঁর কথায়, “রাহুল গান্ধী বিদেশে কিছু মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বিজেপি সংসদ চলতে দেবে না বলছে। এর মানে তারা চায় না কংগ্রেসকে ব্যবহার করে সংসদ চলবে। বিজেপি চায় রাহুল গান্ধী বিরোধীদের মুখ হোন, যাতে উল্টে বিজেপিই সুবিধা পায়।”