আমফান ঘূর্ণিঝড়ের ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগ এবার বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি শাসিত পঞ্চায়েতের হাত ধরেই টাকা পেয়েছে পাকা বাড়ির মালিকরা, অভিযোগ এমনটাই। সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার কনিয়াড়া ২ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েত দফতরে এই অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেল। চলল ব্যাপক ইটবৃষ্টিও। বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান স্বীকার করে নিয়েছেন, "কয়েকজন পাকাবাড়ির মালিকও আমফানের ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। ইতিমধ্যে ১৪- ১৫ জন টাকা ফেরতও দিয়ে দিয়েছেন।"
আমফানে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে দুর্নীতিতে রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল। সর্ব ক্ষেত্রেই নিশানায় শাসক দল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট নির্দেশ, "আমফানে জড়িত দুর্নীতিগ্রস্তদের ছাড়া হবে না। সে যেই হোক না কেন।" ইতিমধ্যে শুধু নন্দীগ্রামেই ২০০ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীকে ‘শো কজ’ করা হয়েছে। অন্যদিকে আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত কর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পূর্বমেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন করছে বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব আমফান নিয়ে রোজ তোপ দাগছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে বিজেপি পরিচালিত গ্রামপঞ্চায়েতের বিরুদ্ধেই আমফানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠল। ঘেরাও হল পঞ্চায়েত অফিস।
আরও পড়ুন- ‘দাপুটে’ বিজেপি সাংসদকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ তৃণমূল নেতার
সোমবার কনিয়াড়া ২ গ্রামপঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূল কংগ্রেস অঞ্চল অফিসের সামনে ঝাঁটা, জুতো নিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভ চলাকালীন গ্রামপঞ্চায়েতের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা। বাধা পেয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কা ধাক্কি শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, ঝাঁটা নিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা।
আরও পড়ুন- প্রশান্ত কিশোরের “দিদিকে বলো” কে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে “বাপ কে বলো”
এদিকে, টাকা দেওয়ার কিছু ক্ষেত্রে যে অনিয়ম হয়েছে তা মেনে নিয়েছেন কনিয়াড়া ২ নম্বর অঞ্চল প্রধান বিজেপির অনামিকা বিশ্বাস। তিনি বলেন, "কোনও কারণে পাকাবাড়িতে টাকা চলে গিয়েছে, সেই টাকা ফেরত নেওয়া চলছে। ইতিমধ্যে ১৪-১৫ জন দিয়ে দিয়েছে। এই নিয়েই ক্ষোভ-বিক্ষোভ।" তবে পঞ্চায়েত সদস্যরা কোনও দুর্নীতি করেননি বলে তিনি দাবি করেছেন। অনামিকা বিশ্বাস বলেন, "এদিন তৃণমূল পরিকল্পান করেই ইটবৃষ্টি করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে এই নিয়ে অভিযোগ জানাব।"
আরও পড়ুন- দুর্নীতির অভিযোগ, ২০০ জনকে শোকজ তৃণমূলের
যখন সব ক্ষেত্রে আমফান দুর্নীতির তির থাকে তৃণমূলের দখলে থাকা গ্রামপঞ্চায়েতোর বিরুদ্ধে, তখন এখানে ঠিক তার বিপরীত চিত্র। এখানে নিশানায় বিজেপি পরিচালিত গ্রামপঞ্চায়েত। তৃণমূলের বাগদা বিধানসভার চেয়ারম্যান তরুণ ঘোষ বলেন, "আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতি করেছে বিজেপি প্রধান ও সদস্যরা। এই বিষয়ে কনিয়াড়া ২ নম্বর অঞ্চল তৃণমূলের পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আমাদের শান্ত অবস্থান-বিক্ষোভের মধ্যে বিজেপির লোক প্রবেশ করে ইটবৃষ্টি ঘটিয়েছে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন