বকেয়া ডিএ-সহ একাধিক দাবিদাওয়া আদায়ে আজ রাজ্য সরকারের সব দফতরে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চ। ধর্মঘট রুখতে নবান্নের কড়া মনোভাব সত্ত্বেও সরকারি কর্মীদের একটি বড় অংশ কিন্তু সুর চড়া রেখেছেন। নবান্নের নির্দেশিকা উপেক্ষা করেই আজ কাজে যোগ দেননি বহু সরকারি কর্মী। বেলা ১১টার পরেও এদিন মহাকরণ ছিল কার্যত শুনশান। বিকাশ ভবন, খাদ্য ভবনের মতো সরকারি দফতরেও কর্মীদের হাজিরা ছিল বেশ কম।
এদিনের এই ধর্মঘট রুখতে গোড়া থেকেই নবান্ন ছিল বেশ কড়া। রাজ্য প্রশাসনের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, শুক্রবার সরকারি কর্মচারীদের কাজে যোগ দিতেই হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের সকলকে সঠিক সময়ে যেতে হবে। অন্যান্য দফতরের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। যথার্থ কারণ ছাড়া কেউ কাজে অনুপস্থিত থাকলে এক দিনের বেতন কাটা যাবে। ছেদ পড়বে কর্মজীবনের একটি দিন।
তবে নবান্নের কড়া নির্দেশিকা উড়িয়েই আজ ধর্মঘটে সামিল সরকারি কর্মচারীদের একটি বড় অংশ। রাজ্যের এই নির্দেশিকার পাল্টা চিঠিও দিয়েছে কর্মচারী সংগঠন। অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত কর্মচারী যৌথ কমিটির সদস্যরা। ধর্মঘটে অনড় থাকার কথা জানিয়েই চিঠি দেয় এই সংগঠন। অন্যদিকে আজকের এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস, ধর্মঘচের পাশে থাকার বার্তা বিজেপিরও।
আরও পড়ুন- ‘বনধ ডাকায় উনি তো চ্যাম্পিয়ন! এখন না বলছেন কেন?’ বেজায় টিপ্পনি দিলীপের
সরকারের এই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে শহিদ মিনারে অনশনরত আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চের একাধিক সদস্যের দাবি, স্পষ্ট হচ্ছে যে সরকার ভয় পেয়েছে। তাই এই চোখ রাঙানি। ধর্মঘট করা কর্মচারীদের আইন স্বীকৃত অধিকার, সেটা সরকার বোধ হয় ভুলে গিয়েছে। নির্দেশিকা জারি করে ভয় দেখিয়ে ধর্মঘট ঠেকানো যাবে না।
কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-এর দাবিতে সোচ্চার সরকারি কর্মীদের বেশিরভাগ সংগঠন। দাবি আদায়ে যৌথ মঞ্চ গড়ে চলছে অনশন আন্দোলন। তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে ঘোষণা করেন যে, আর্থিক সংকটে রাজ্য সরকার। তাই এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়া সম্ভব নয়। বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, ‘আর কত লাগবে নন্দলালদের? আমার মুণ্ডু কেটে নিলেও আর দিতে পারব না।’
আরও পড়ুন- ‘বাংলা লিখতেই জানেন না’, জেরায় কেষ্ট ‘ঘোল’ খাওয়াচ্ছেন পোড়খাওয়া ED-র কর্তাদেরও?
রাজ্যে পালাবদলের পরই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকার ধর্মঘট আন্দোলনের বিরোধী। ২০১১ সালের পর রাজ্যে কেউ ধর্মঘট ডাকলেই তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে নবান্ন। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।