একে করোনা আতঙ্কের হিমসিম অবস্থা। তার মাঝেই আমফান ধাক্কা। বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গ। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেরবার রাজ্য প্রশাসন। দুর্গতদের সাহায্যের কাজে ব্যস্ত সরকারি কর্মীরা। এই অবস্থায় এ রাজ্যে আগামী ২৬ মে পর্যন্ত শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন প্রবেশ বন্ধ রাখার আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই রেলকে চিঠি দিয়ে এই আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রেলকে দেওয়া চিঠিতে মমতা লিখেছেন, 'সাইক্লোন আমফান বিধ্বস্ত এলাকায় জেলা প্রশাসন ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজে ব্যস্ত। আগামী কযেকদিন তাই শ্রমিক স্পেশালে যাঁরা ফিরবেন তাঁদের উপর নজরদারি চালানো সম্ভব হবে না। তাই ২৬ মে পর্যন্ত রাজ্যে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন প্রবেশ করানো বন্ধ করা হোক।'
এই শ্রমিক স্পেশাল ঘিরেই কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে পৌঁছেছিল। তার মধ্যেই বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই শ্রমিক স্পেশালে ট্রেনে নিজের রাজ্যে ফিরছেন বাংলার রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা। কড়া নজরদারিতে তাঁদের ঘরে ফেরানো হচ্ছে। ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই পজিটিভ বলেজানা গিয়েছে। তাদের কোয়ারান্টিনে রেখে চিকিৎসার করানোর আয়োজন করেছে রাজ্য প্রশাসন। অনেকেরই ধারনা, ত্রাণের কাজে জেলা প্রশাসনের বহু কর্মী ব্যস্ত হয়ে পড়ায় পরিযায়ীদের নজরদারির কাজ ঠিকমতো করে ওঠা সম্ভব নয়। তাই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবেই আমফান পরবর্তী সময়ে আগামী কয়েকদিন এ রাজ্যে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন প্রবেশ করাতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- LIVE: আমফান বিধ্বস্ত বাংলায় মৃত্যু বেড়ে ৮৬
তবে, মুখ্যমন্ত্রীর এই আবেদন নিয়ে রেলেরও কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিযেছিলেন যে, আগামী এক মাস ধরে ১০৫টি শ্রমিক স্পেশালে এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরবেন। পরিযায়ীদের রেল যাত্রার সব খরচ দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
গত বুধবার ভয়াবহ আমফান সাইক্লোনে ধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গের দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ও নদিয়ার একাংশ। পরিস্থির গুরুত্হ আঁচ করতে পেরেই শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার আমফান বিপর্যস্ত হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাট এলাকা হেলিকপ্টারে ঘুরে দেখেছেন মোদী ও মমতা। পরে রাজ্যকে হারার কোটি ত্রাণ সহায়তার ঘোষণার করেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, রাজ্যেও করোনার প্রকোপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৩৩২। বাংলায় করোনায় মৃত ১৯৩। করোনা অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ১ হাজার ৮৪৬। সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২২১ জন।
৩০ মে পর্যন্ত নেতাজি সুভাষ বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে অন্তর্দেশীয় বিমান চলাচলের উপরও যাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, তার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করবে রাজ্য় সরকার। শনিবার এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন