ঘটনার পর চারদিন অতিক্রান্ত। এখনও অধরা আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের আততায়ীরা। গভীর হচ্ছে বিক্ষোভের আঁচ। এই অবস্থায় সোমবার রাত থেকেই আনিস মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যরা কাজ শুরু করেছে। আর তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পদক্ষেপ করল পুলিশ। ঘটনার পর কর্তব্যে গাফিলতি ও খারপ ব্যবহারে অভিযোগে আমতা থানার তিন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করল হাওড়া (গ্রামীণ) পুলিশের সুপার সৌম্য রায়। বহিষ্কৃত তিন কর্মীর বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হবে বলে সূত্রের খবর।
সাসপেন্ড করা হয়েছে এক এএসআই সহ তিন জনকে। সাপপেন্ড হওয়া তিন পুলিশ কর্মী হলেন, এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম ও হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা।
ঘটনার পর রাতে ছাত্রনেতা আনিস খানের বাবা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। জানা গিয়েছে, এই তিন পুলিশকর্মীই তখন দায়িত্বে ছিলেন। ছেলের উপর অত্যাচারের কথা এই তিনজনে ফোনে জানিয়েছিলেন আনিসের বাবা সালেম খান। কিন্তু তারপরও পদক্ষেপের কোনও তাগিদ দেখাননি আমতা থানার এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম ও হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা। অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতে দেরি করেছিল। ফলে তদন্তের গতি সেখানে ব্যাহত হয়েছে।
সোমবার রাত বাড়তে সিটের সদস্য ডিআইজি সিআইডি মিরাজ খালিদ এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেটের যুগ্ম কমিশনার ধ্রুবজ্যোতি দে আমতা থানায় যান। পুলিশ সূত্রে খবর, আনিস মৃত্যুকাণ্ডে আমতা থানার পুলিশকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছেন সিটের সদস্যরা। ঘটনার দিন ও সময় কোন পুলিশকর্মীদের ডিউটি ছিল তা জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে। আমতা থানার ওসি-কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এরপরই ঘটনার দিন রাতে ডিউটিতে থাকা তিন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির প্রমাণ মেলে। পরে সাসপেন্ড করা হয় ওই তিনজনকে।
যদিও তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নয় মৃত আনিসের পরিবার। নিহত ছাত্রনেতার বাবা সালেন খান বলেন, 'সাসপেন্ড করে কী হবে। আজ শাস্তি পাবে কাল আবার কাজে যোগ দেবে। এতে কোনও লাভ নেই। আমার ছেলেকে পুলিশই তো মেরেছে। আমি চাই সিবিআই তদন্ত হোক।'
সিআইডি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে ভবানীভবনে তলব করা হয়েছে আমতা থানার ওসি-কে। এডিজি-সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিং আমতার ওসি-কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন।
আরও পড়ুন- খাঁকি উর্দিতে কারা ঢুকেছিল আনিসের বাড়িতে? ডিজির সন্দেহের তালিকায় পুলিশ-ও