রাজ্যে সভা-সমাবেশের অনুমতি না-দেওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে রাজনৈতিক দল-সহ বিভিন্ন সংগঠন। এবার সভা-সমাবেশ নিয়ে হেনস্থা, গ্রেফতার সংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে ৪ সপ্তাহ সময় দিয়েছে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য। ৪ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট না-দিলে প্রোটেকশন অব হিউম্যান রাইটস ১৯৯২ আইন এর ১৩ ধারা প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। এপিডিআর-এর সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত সুরের দাবি, তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতেই কমিশন এই রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। প্রথমবার রিপোর্ট না-দেওয়ায় কমিশনের এই চিঠি বলেই দাবি করেছে এপিডিআর।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর এবং ১৩ অক্টোবর কলকাতার রাজাবাজার মোড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা ঘটনার প্রতিবাদে পথসভা করতে চেয়েছিল মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। নিয়মমাফিক সভা করার কথা পুলিশকে জানিয়েছিল এপিডিআর। পুলিশ কোনও আপত্তি জানায়নি বলেই জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর। তিনি বলেন, '২৯ সেপ্টেম্বর মিটিংয়ের জন্য জমায়েত হতেই পুলিশ আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় নিয়ে যায়। রাত পর্যন্ত আটকে রেখে ছেড়ে দেয়। একইরকম ভাবে ১০ অক্টোবরও এপিডিআর এর সভা পুলিশ ভেস্তে দেয়। অথচ ওই এলাকায় কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। ১৪৪ ধারাও ছিল না। এইভাবে এপিডিআর কর্মীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের বিরুদ্ধে এবং পুলিশের অসাংবিধানিক, বেআইনি আচরণের বিচার চেয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলাম।'
আরও পড়ুন- বাংলার আবাস যোজনায় বিহারের বাসিন্দার নাম, ফাঁস হতেই তীব্র বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের
রাজ্যে সভা সমাবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এর আগে করেছে বিজেপি, বাম-সহ বিরোধী সংগঠনগুলি। এসএফআইয়ের মিছিল শুরু হওয়ার আগেই পুলিশের ধরপাকড়ের ছবিও দেখা গিয়েছে। রঞ্জিত শূর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'সেপ্টেম্বরে পুলিশ সভা করতে দেয়নি বলে ১০ ডিসেম্বর সভা করতে গিয়েছিলাম। সেটাও করতে দেয়নি। সভার আবেদন করলেও পুলিশ কিছু জানাচ্ছে না। এবিষয়ে বারেবারে আদালতে যাওয়া যায় না। অত অর্থ কোথা থেকে পাব? তাই আমরা দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার কমিশন, মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছি। রাজ্য সভা-সমাবেশের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। তার প্রতিবাদে দ্বিতীয় সভা করতে গিয়েছিলাম।' এপিডিআইরের দাবি, গত ৩১ অক্টোবরে পাঠানো মানবাধিকার কমিশনের চিঠির কোন জবাবই দেয়নি পুলিশ কমিশনার বা ডিজি। তাই ফের কড়া চিঠি পাঠাল কমিশন।